
বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আলেপ উদ্দিনসহ পাঁচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ১৪টি গুমের অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে এ অভিযোগ করে ভয়েস অব ইনফোর্স ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসনস-ভয়েড। গুমের শিকার কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনটির উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম মিঠু এসব অভিযোগ জমা দেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার তথা শেখ হাসিনার শাসনামলে অসংখ্য মানুষ গুমের শিকার হয়েছেন। ১০ হাজারেরও বেশি ভুক্তভোগী সারা বাংলাদেশে রয়েছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ। তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সাধারণ জনগণ হওয়ার কারণে এখনো প্রকাশ্যে আসতে ভয় পাচ্ছেন তারা। এখনো আতঙ্ক কাটছে না। তাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে তাদের নিয়ে ভয়েড সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
এরই মধ্যে ভয়েডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেড় শতাধিক গুমের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ১৪টি অভিযোগ করা হয়। এর মধ্যে মাসুদ গাজী নামের একজন ভুক্তভোগীও নিজের গুমের বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি ৪৫ দিন র্যাবের গোপন বন্দিশালায় গুম ছিলেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ভয়েডে এখনো দুই শতাধিক ভুক্তভোগী রয়েছেন বলে জানান সংগঠনটির নেতা। তবে ধারাবাহিকভাবে সবাইকে প্রকাশ্যে আনা হবে। একইসঙ্গে অতীতের বীভৎস ঘটনা জাতির সামনে তুলে ধরে সতর্ক করা হবে।
এসব অভিযোগের ১৩টিই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আলেপের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে সোমবার এসব অভিযোগ দেওয়া হয়।
গুমের শিকার কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনটির উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম মিঠু এসব অভিযোগ জমা দেন। এ বিষয়ে মিঠুু সাংবাদিকদের বলেন, ‘পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১০ হাজারের বেশি মানুষ গুম হয়েছে। তার মধ্যে ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি গুমের ঘটনায় অভিযোগ দেওয়া হলো।’
মিঠুর সঙ্গে থাকা গুমের শিকার মাসুদ গাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৯ সালে ইজতেমা থেকে বাসায় ফেরার পথে বিনা অভিযোগে আমাকে ধরে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চোখ বেঁধে টানা ৪৫ দিন আমাকে নির্যাতন করা হয়।’