
ছবি: সংগৃহীত।
অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা করার চিন্তাতেই বিরক্ত হন। সূর্য ওঠার আগেই জগিং কিংবা যোগব্যায়াম শুরু করা যাদের কাছে দুঃস্বপ্ন, তাদের জন্য সুখবর—ফিটনেসের জন্য সকালই একমাত্র সময় নয়। দেরিতে ওঠা মানুষদের জন্য রয়েছে কার্যকর কিছু কৌশল। জেনে নিন এমন ১০টি স্মার্ট ফিটনেস টিপস, যেগুলো আপনার রুটিনের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।
১. যখন আপনি স্বাভাবিকভাবে চাঙা থাকেন, তখনই শরীরচর্চা করুন:
সকালে ১০টার আগে যদি শরীর কাজ না করে, তাহলে জোর করে ব্যায়াম করার দরকার নেই। বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে শরীরের তাপমাত্রা, সমন্বয় ও শক্তি স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে—তখন শরীরচর্চা করলে ফল ভালো পাওয়া যায়।
২. দীর্ঘ ব্যায়ামের বদলে ছোট ছোট ব্যায়াম করুন:
ঘণ্টাব্যাপী ঘাম ঝরানোর দরকার নেই। বরং দিনে কয়েকবার ১০-১৫ মিনিটের ব্যায়াম করতে পারেন—দুপুরের বিরতিতে স্কোয়াট, খাওয়ার আগে প্ল্যাঙ্ক। সময় বাঁচে, ক্লান্তিও কম লাগে।
৩. দুপুর ৩টার ঝিমুনি কাটাতে ব্যায়াম করুন:
মধ্য দুপুরে যখন মাথা কাজ করে না, তখনই কয়েক মিনিট হাঁটা, হালকা স্ট্রেচ বা সহজ ওয়ার্কআউট আপনার ঘুম কাটাতে পারে—কফির চেয়ে ভালো ফল দেবে এবং ক্যালোরিও পোড়াবে।
৪. দৈনন্দিন কাজে হাঁটা-চলার সুযোগ খুঁজে নিন:
জিমে না গিয়েও সক্রিয় থাকা সম্ভব। ফোনে কথা বলার সময় হাঁটুন, টিভি দেখার সময় স্ট্রেচ করুন, লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়ি ব্যবহার করুন—এভাবেই দৈনন্দিন জীবনে শরীরচর্চা ঢুকে যাবে।
৫. যাতায়াতকে কার্ডিওতে রূপ দিন:
সকাল আপনার পছন্দ না হলেও অফিস বা ক্লাসে তো যেতেই হয়! হাঁটা বা সাইকেল চালিয়ে কিছুটা পথ পাড়ি দিন। গাড়ি একটু দূরে পার্ক করুন বা এক স্টপ আগে বাস থেকে নামুন—অতিরিক্ত কোনো প্রস্তুতির দরকার নেই।
৬. বাসার কাজকে ব্যায়ামে রূপ দিন:
জোরে ঝাড়ু দিন, গান শুনে থালাবাসন মাজুন, ঝুঁকে ঝুঁকে জিনিস তুলুন—এসব কাজকেও ব্যায়ামে পরিণত করা যায়। শরীরচর্চা না করতে চাইলে এটিই হতে পারে সহজ সমাধান।
৭. যেসব ব্যায়ামে আনন্দ পান, সেগুলোই করুন:
শরীরকে শাস্তি না দিয়ে খেলাধুলা বা মজা যেটা লাগে, সেটা বেছে নিন। নাচ, পাহাড়ে হাঁটা, মার্শাল আর্ট বা হুলা হুপিং—যেটা ভালো লাগে সেটাই করুন। এতে ব্যায়াম অভ্যাসে পরিণত হবে।
৮. সন্ধ্যাবেলায় মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম করুন:
যাঁরা রাতে জেগে থাকেন, তাঁদের জন্য সন্ধ্যার ব্যায়াম আদর্শ। অফিস শেষে যোগব্যায়াম, হাঁটা বা জিম—সবই স্ট্রেস কমায় এবং ঘুম ভালো করে।
৯. ছোট লক্ষ্য স্থির করে অভ্যাস গড়ুন:
সপ্তাহে ২-৩ দিন দিয়ে শুরু করুন। কখন ব্যায়াম করছেন সেটা নয়, বরং কেমন লাগছে সেটার ওপর গুরুত্ব দিন। নিজের শরীর ও রুটিনকে সম্মান জানিয়ে ধীরে ধীরে অভ্যাস গড়ুন।
১০. ফিটনেস কোনো নির্দিষ্ট সময়ের বিষয় নয়:
সুস্থ থাকতে হলে সকালের ঘুম হারাম করতে হবে—এমন নয়। দিনের যেকোনো সময় শরীরচর্চা করলে সুফল পাওয়া যায়। গুরুত্বপূর্ণ হলো—নিয়মিত থাকা এবং নিজের রুটিন অনুযায়ী চলা।
মিরাজ খান