ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

নীরব ঘাতক লিভার সিরোসিস যেভাবে প্রতি মিনিটে ঝুঁকিতে ফেলছে শত শত মানুষ!

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২২ জুলাই ২০২৫

নীরব ঘাতক লিভার সিরোসিস যেভাবে প্রতি মিনিটে ঝুঁকিতে ফেলছে শত শত মানুষ!

ছবি: সংগৃহীত।

লিভার সিরোসিস এক মারাত্মক এবং ধীরে ধীরে অগ্রসরমান লিভার রোগ, যা বিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশেও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। চিকিৎসকদের ভাষায়, এটি মূলত লিভারের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ফলে সৃষ্ট একটি অবস্থা, যেখানে লিভারের কোষ ধ্বংস হয়ে চাকা চাকা আঁশে (ফাইব্রোসিস) পরিণত হয়, ফলে লিভারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সিরোসিসের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত মদ্যপান, দীর্ঘদিন ধরে ভাইরাল হেপাটাইটিস (বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি ও সি), ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং ওষুধ বা রাসায়নিক পদার্থজনিত লিভার ক্ষতি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, স্থূলতা ও অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারজনিত সিরোসিসের হার দ্রুত বাড়ছে।

লক্ষণসমূহ:
প্রথমদিকে সিরোসিসের তেমন লক্ষণ দেখা না গেলেও, ধীরে ধীরে রোগী ক্লান্তি, ওজন হ্রাস, পেট ফুলে যাওয়া, চোখ ও চামড়া হলুদ হয়ে যাওয়া (জন্ডিস), ত্বকে চুলকানি, বমি বমি ভাব, রক্তক্ষরণ ও মানসিক বিভ্রান্তির মতো উপসর্গে ভুগতে পারেন।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:
বিশেষজ্ঞরা বলেন, “লিভার সিরোসিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য নয়, তবে শুরুতেই রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন গ্রহণ করলে রোগের গতি মন্থর করা সম্ভব। হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে টিকাদান ও সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।”

তাছাড়া, “নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মদ্যপান পরিহার, ওজন নিয়ন্ত্রণ, ব্যালান্সড ডায়েট এবং সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা নেওয়াই লিভার সুস্থ রাখার উপায়।”

সচেতনতার অভাবেই বিপদ:
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে লিভার সিরোসিস নিয়ে সচেতনতা এখনো যথেষ্ট নয়। ফলে অনেকেই দেরিতে চিকিৎসা নেয় এবং ততক্ষণে রোগ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। জাতীয় পর্যায়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্ক্রিনিং সেবা চালুর ওপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা।


লিভার সিরোসিস একটি নীরব ঘাতক, যা প্রতিদিন অগণিত মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলছে। এই রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা, সময়মতো চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই হতে পারে একমাত্র রক্ষা কবচ।

মিরাজ খান

আরো পড়ুন  

×