
ছবি: সংগৃহীত
৩৬০ বর্গকিলোমিটারের ছোট্ট উপত্যকা গাজা এখন যেন ধ্বংসস্তূপের রাজ্য। ইসরায়েলের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা বোমাবর্ষণে ইতোমধ্যেই অঞ্চলটির ৮৮ শতাংশ এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, এই আক্রমণে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টন বোমা—যার ফলে গাজায় জমে উঠেছে প্রায় ৫ কোটি টন ধ্বংসস্তূপ।
এই বিপুল ধ্বংসযজ্ঞে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৬২ বিলিয়ন ডলার। ধ্বংসস্তূপ বৈধভাবে অপসারণ করতে যেখানে প্রয়োজন পড়বে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার এবং ১০ বছরের বেশি সময়, সেখানে ইসরায়েল এগিয়ে এসেছে নতুন এক কৌশলে—ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিচ্ছে নিজেরাই। আর এতে যুক্ত হয়েছে বেসামরিক ইসরায়েলি ঠিকাদাররাও, যাদের মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে নিয়োগ করছে আইডিএফ।
বেঁচে যাওয়া ভবনও টার্গেটে
বোমার আঘাতে যেসব ভবন টিকে আছে, সেগুলোকেও এখন পরিকল্পিতভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিবিসি ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক অন্যান্য সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী ও ঠিকাদাররা রাফা, খান ইউনিসসহ বিভিন্ন এলাকায় বুলডোজার, খননযন্ত্র এবং নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ব্যবহার করে বেঁচে যাওয়া ভবনও নিশ্চিহ্ন করে দিচ্ছে। আবাসিক ভবন, স্কুল, মসজিদ—কোনও কিছুই বাদ যাচ্ছে না।
অভিনব ব্যবসায়িক চক্র
ধ্বংসযজ্ঞ যেন পরিণত হয়েছে নতুন এক বাণিজ্যে। ইসরায়েলের পত্রিকা দ্য মার্কার এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন একেকটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ১৫০০ ডলার পারিশ্রমিক। একজন ভারী যন্ত্রচালকের আয় দিনে হতে পারে ৩০০ ডলার পর্যন্ত। তিনতলা ভবন গুঁড়িয়ে দিতে মিলছে ৭৫০ ডলার, আর উচ্চ ভবন ভাঙলে আরও বেশি।
অনলাইন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এখন ঠিকাদার নিয়োগের হারও বেড়েছে কয়েকগুণ—বলছে মিডল ইস্ট মনিটর।
লোভ আর লুকানোর খেলা
প্যালেস্টাইন ইনফরমেশন সেন্টার এবং মিনা নিউজ এজেন্সি জানায়, ধ্বংসস্তূপে থাকা লোহা, পাথর ও অন্যান্য উপকরণ পুনর্ব্যবহারের জন্য সেগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে ইসরায়েলি নির্মাণ কোম্পানিগুলোর কাছে। শুধু আর্থিক লাভ নয়, এর নেপথ্যে রয়েছে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ মুছে ফেলা এবং ফিলিস্তিনিদের পুনর্গঠনে বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্য। যাতে করে গাজার ভবিষ্যৎ উন্নয়নও হয় ইসরায়েলের পরিকল্পনার মধ্যে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=z8odfY3WgHY
রাকিব