
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িত থাকা অবস্থাতেও সামরিক শক্তি প্রদর্শনে পিছপা নয় রাশিয়া। একদিকে শান্তি আলোচনার আলোচনা, অন্যদিকে যুদ্ধের গতি বৃদ্ধি—এই দ্বিমুখী কৌশলের ধারাবাহিকতায় এবার চারটি সাগর ও মহাসাগরে একযোগে বিশাল নৌমহড়া শুরু করেছে দেশটি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘জুলাই স্ট্রোম’ বা ‘জুলাই ঝড়’ শীর্ষক এই মহড়া শুরু হয়েছে বুধবার, ২৩ জুলাই এবং তা চলবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। এতে অংশ নিচ্ছে ১৫০টির বেশি যুদ্ধজাহাজ, প্রায় ১৫ হাজার সামরিক সদস্য এবং ১২০টির বেশি সামরিক বিমান। মহড়াটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগর, আর্কটিক মহাসাগর, বাল্টিক সাগর ও কাস্পিয়ান সাগরে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, এই মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো অপ্রচলিত সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি মূল্যায়ন, দূরপাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের সক্ষমতা যাচাই এবং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক প্রযুক্তির দক্ষতা পরীক্ষা করা।
রাশিয়ার মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মহড়ায় অংশ নেওয়া নৌবাহিনীর ইউনিটগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েন, সাবমেরিন প্রতিরোধ, নৌঘাঁটি ও অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা, বিমান হামলা মোকাবিলা, ড্রোন ও শত্রু অনুপ্রবেশকারী নৌকায় প্রতিরোধ গঠন এবং শত্রু নৌ ইউনিটে পাল্টা হামলার অনুশীলন করবে।
মহড়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন রুশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আলেকজান্ডার মোজেম। এতে অংশ নিয়েছে ১০টি উপকূলীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ইউনিট এবং ১২০টির বেশি যুদ্ধবিমান।
বিশ্লেষকদের মতে, এই মহড়া মূলত রাশিয়ার সামরিক শক্তির একটি প্রদর্শনী, বিশেষ করে যখন ইউক্রেন যুদ্ধে নৌবাহিনীর একাধিক ক্ষতির মুখে পড়েছে মস্কো। তবুও বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পরেই তৃতীয় বৃহত্তম নৌবাহিনী রাশিয়ার।
রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এসবিআর (Foreign Intelligence Service) এর বরাতে মস্কো টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, পশ্চিমা সামরিক জোট নেটো এখন মলদোভাকে ব্যবহার করছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধে। এসবিআরের দাবি, নেটো মলদোভাকে পূর্ব ইউরোপের নতুন ফ্রন্ট হিসেবে গড়ে তুলছে, যার ফলে আবারও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন হতে পারে।
এদিকে, এর আগে ২১ জুলাই থেকে ইরানের সঙ্গে যৌথভাবে ‘কাসারিস ২০২৫’ সাংকেতিক নামে তিন দিনব্যাপী আরেকটি নৌমহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। কাস্পিয়ান সাগরে চলমান এই মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো সমুদ্র নিরাপত্তা, মানবিক উদ্ধার তৎপরতা এবং উপকূলবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধি। তবে এতে কতটি জাহাজ বা অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=o3MKSBK-hcM
রাকিব