
ছবিঃ সংগৃহীত
কিডনি আমাদের শরীরের ফিল্টারের মতো কাজ করে। এটি রক্তের বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি এবং বিষাক্ত উপাদান শরীর থেকে বের করে দেয়। তবে যখন কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়, তখন শরীরে এসব বর্জ্য জমা হতে থাকে, যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। ধীরে ধীরে কিডনি কর্মক্ষমতা কমতে থাকলে তা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD)-এ পরিণত হতে পারে। তবে কিছু আগাম লক্ষণ আছে যা জানলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব।
নিচে এমন পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের কথা জানানো হলো:
১. প্রস্রাবে পরিবর্তন
কিডনির সমস্যার সবচেয়ে প্রথম লক্ষণগুলোর একটি হলো প্রস্রাবের পরিমাণ ও ধরনে পরিবর্তন। যেমন:
রাতের বেলায় বারবার প্রস্রাব হওয়া (নকচুরিয়া)
প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা প্রস্রাব করতে সমস্যা হওয়া
প্রস্রাবে ফেনা বা বুদবুদ দেখা দেওয়া, যা কিডনি থেকে প্রোটিন বের হওয়ার ইঙ্গিত দেয়
গাঢ় রঙের প্রস্রাব বা প্রস্রাবে রক্ত
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।
২. শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলা
কিডনি সঠিকভাবে তরল নিঃসরণ করতে না পারলে শরীরে পানি জমে যায়। ফলে পা, গোড়ালি, হাত ও চোখের নিচে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। দাঁড়িয়ে থাকা বা রাতে ফোলাভাব আরও বেশি হয়। এই অবস্থা অবহেলা করলে ফুসফুসে পানি জমতে পারে, যা শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে।
৩. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
কিডনি ইরিথ্রোপয়েটিন (EPO) নামক একটি হরমোন তৈরি করে, যা রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা করে। কিডনির কার্যক্ষমতা কমলে EPO কমে যায় এবং রক্তে লোহিত কণিকার ঘাটতি হয়, ফলে অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। এতে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং অল্প পরিশ্রমেই শরীর ভেঙে পড়ার মতো অনুভূতি হয়।
৪. চুলকানি ও পেশিতে টান
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে শরীরে বর্জ্য এবং খনিজ পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস জমা হয়। এতে:
রাতের বেলা ত্বকে চুলকানি
পেশিতে টান বা খিঁচ
এই সমস্যাগুলো বর্জ্য পদার্থ এবং খনিজের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়ে থাকে।
৫. বিভ্রান্তি বা মানসিক অস্পষ্টতা
কিডনি দুর্বল হলে রক্তে বিষাক্ত পদার্থ জমে থাকে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। এতে:
মনোযোগের ঘাটতি
ভুলে যাওয়া বা সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা
বিভ্রান্তি বা মাথা ভার লাগা
এই অবস্থায় অনেকেই বলেন, তাঁদের মাথা যেন ঝাপসা হয়ে যায় এবং তারা মানসিকভাবে খুবই ক্লান্ত বোধ করেন।
কী করণীয়?
এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। এছাড়া:
পর্যাপ্ত পানি পান করা
সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা (শস্য, সবজি, ফলমূল)
এই অভ্যাসগুলো কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
সূত্র: টাইমস অফ ইন্ডিয়া
নোভা