
ছবি: সংগৃহীত
কিডনি মানবদেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় এবং শরীরে পানি ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা কিডনির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার কিডনিকে সুস্থ রাখে, আবার কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
✅ কী খাবেন কিডনি ভালো রাখতে?
১. পানি:
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে (৮–১০ গ্লাস) বিশুদ্ধ পানি পান করলে কিডনি বর্জ্য বের করতে সুবিধা পায়। তবে যাদের কিডনির রোগ আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি খাবেন।
২. শাকসবজি ও ফলমূল:
কম পটাশিয়ামযুক্ত ফল যেমন আপেল, আঙ্গুর, স্ট্রবেরি ও কমলা খেতে পারেন। শাকসবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা ও লাউ উপকারী।
৩. সীমিত প্রোটিন:
ডিমের সাদা অংশ, ডাল ও মাছ খাওয়া যেতে পারে, তবে পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ রাখা জরুরি। অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
৪. স্বাস্থ্যকর চর্বি:
অলিভ অয়েল, বাদাম ও অ্যাভোকাডো কিডনির জন্য নিরাপদ, তবে বেশি খাওয়া যাবে না।
৫. সম্পূর্ণ শস্য:
ব্রাউন রাইস, ওটস ও বার্লি সীমিতভাবে খাওয়া যেতে পারে, যা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
❌ যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন:
১. অতিরিক্ত লবণ:
সোডিয়ামবহুল খাবার যেমন চিপস, প্রক্রিয়াজাত মাংস, আচার ইত্যাদি কিডনির ক্ষতি করতে পারে। রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা কিডনির বড় শত্রু।
২. উচ্চ পটাশিয়াম ও ফসফরাসযুক্ত খাবার:
কলা, আলু, টমেটো, দুধ ও চিজে পটাশিয়াম ও ফসফরাস বেশি থাকে। কিডনি রোগীদের জন্য এই খাবার ঝুঁকিপূর্ণ।
৩. প্রক্রিয়াজাত খাবার ও সফট ড্রিংক:
এগুলোতে সোডিয়াম ও কেমিক্যাল সংযোজক থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
৪. মিষ্টি ও চিনি:
অতিরিক্ত চিনি ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে, যা কিডনির অন্যতম প্রধান শত্রু। ক্যান্ডি, মিষ্টি ও কোল্ড ড্রিংক এড়িয়ে চলাই ভালো।
৫. ব্যথানাশক ওষুধের অপব্যবহার:
NSAIDs জাতীয় ওষুধ দীর্ঘদিন খেলে কিডনি বিকল হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া সেবন করবেন না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চিকিৎসক বলেন, "প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটাচলা ও নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ করলেই কিডনি অনেক দিন সুস্থ রাখা সম্ভব। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক।"
সবার জন্য পরামর্শ:
✅ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
✅ ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন
✅ বছরে অন্তত একবার কিডনি ফাংশন টেস্ট করান
Mily