ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

মহাকাশে শক্তি প্রদর্শন করলো ইরান, দিলো স্পষ্ট বার্তা 

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ২৩ জুলাই ২০২৫

মহাকাশে শক্তি প্রদর্শন করলো ইরান, দিলো স্পষ্ট বার্তা 

মহাকাশে শক্তি প্রদর্শন করলো ইরান

ইরান মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে নতুন করে রাজনৈতিক বার্তা দিল। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ‘কাসেদ’ নামের উৎক্ষেপণযান ব্যবহার করে সাবঅরবিটাল কক্ষপথে সফলভাবে একটি স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধুই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং একটি কৌশলগত মনোভাবের প্রকাশ।

ওয়াশিংটনের এলিয়ট স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সহকারী অধ্যাপক ও মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক সিনা আজোদি মনে করেন, ইরান এখন কেবল সক্ষমতা বাড়ানোর পথেই নেই, বরং একইসঙ্গে স্পষ্টভাবে শক্তির বার্তা দিচ্ছে। তিনি বলেন, এমন উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করছে—যা সরাসরি সংঘাত ছাড়াই অর্জন সম্ভব হচ্ছে।

মহাকাশ গবেষণা না সামরিক উদ্দেশ্য?

ইরান দাবি করছে, তাদের মহাকাশ গবেষণার অংশ হিসেবেই এই উৎক্ষেপণ। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি প্রকৃতপক্ষে সামরিক কৌশলেরই অঙ্গ। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু ফক্স জানান, ইরান এই উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, দীর্ঘমেয়াদি সামরিক পরিকল্পনা এখনও বহাল রয়েছে। এমনকি বিকল্প পথে তারা শক্তি ধরে রাখার চেষ্টায় রয়েছে।

ওয়াশিংটনের গবেষক ফাতিমা আল-আসরা মনে করেন, একই প্রযুক্তিতে স্যাটেলাইট ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ সম্ভব। তার ভাষায়, প্রতিটি মহাকাশ উৎক্ষেপণই দূরপাল্লার আঘাত হানার সক্ষমতা বাড়ায়।

মার্কিন গবেষণা সংস্থা ইউনাইটেড এগেইনস্ট নিউক্লিয়ার ইরানের কাসরা আরাবি বলেন, ‘কাসেদ’ উৎক্ষেপণ ইউরোপের জন্য এক ধরনের সতর্ক সংকেত। ইরানের সামরিক সক্ষমতা রুখতে জাতিসংঘের স্ন্যাপব্যাক নিষেধাজ্ঞা পুনরায় কার্যকর করার সময় এখন।

যুদ্ধের সময় ইরানের কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস হলেও, এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বুঝিয়ে দিয়েছে—তাদের লক্ষ্য এখনও অটল। তারা শুধু নিজেদের আঞ্চলিক অবস্থান ধরে রাখতে চায় না, বরং প্রভাব বাড়াতেও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এই মহাকাশ অভিযান তাই কেবল একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে নিজেদের দৃঢ়তা ও কৌশলগত অবস্থানের একটি বলিষ্ঠ প্রমাণ।

সূত্র: ইরান ইন্টারন্যাশনাল

তাসমিম

×