
ট্রাম্পের হাতে দেখা দেওয়া কালো দাগ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে দেখা দেওয়া কালো দাগ নিয়ে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোড়ন। অনেকে ধারণা করছেন, তিনি হয়তো গুরুতর কোনো রোগে ভুগছেন যা গোপন রাখা হচ্ছে। এই গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিড মুখ খুলেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সি নামক এক ধরনের শিরা-সংক্রান্ত রোগে ভুগছেন। এটি মূলত বয়স্কদের একটি সাধারণ শারীরিক সমস্যা, যেখানে শিরার ভেতরের ক্ষুদ্র ভাল্বগুলো ধীরে ধীরে তাদের কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এর ফলে পায়ে ফোলাভাব, ভারী লাগা কিংবা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
কীভাবে ধরা পড়ে এই রোগ?
সম্প্রতি ট্রাম্প পায়ে অস্বস্তি অনুভব করলে তাঁর পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখানে তাঁর দুই পায়ের নিচের অংশে ভেনাস ডপলার আল্ট্রাসাউন্ডসহ নানা ধরনের ডায়াগনস্টিক টেস্ট করা হয়। পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, তিনি এই রোগে আক্রান্ত। তবে হোয়াইট হাউসের বক্তব্য অনুযায়ী, এটি “তেমন ক্ষতিকর কোনো রোগ নয়” এবং প্রেসিডেন্ট এখনও "চমৎকার স্বাস্থ্যেই আছেন"।
কালো দাগ কীভাবে হলো?
গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ট্রাম্পের হাতের কালচে দাগ নিয়েও ব্যাখ্যা দেন প্রেস সেক্রেটারি। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, এই দাগের পেছনে রয়েছে ঘন ঘন হাত মেলানো এবং প্রেসিডেন্টের নিয়মিত অ্যাসপিরিন সেবন। অ্যাসপিরিনজাতীয় ওষুধ রক্ত পাতলা করে, ফলে অল্প চাপেই চামড়ার নিচে রক্ত জমে যায় এবং কালশিটে দাগ সৃষ্টি হয়। প্রেসিডেন্টের বয়স ও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মিলিয়ে এটি স্বাভাবিক বলেই দাবি করেন তিনি।
আগে এই রোগের উল্লেখ ছিল না কেন?
সমালোচকদের প্রশ্ন, গেল এপ্রিল মাসে যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাস্থ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল, তখন সেখানে এই ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সি রোগের কোনো উল্লেখ ছিল না। এর উত্তর সরাসরি না দিলেও হোয়াইট হাউসের ভাষ্যে বোঝা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে রোগটি শনাক্ত হয়েছে।
এই রোগের ঝুঁকি ও পরামর্শ
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগ দীর্ঘস্থায়ী হলে পায়ের নিচে আলসার বা ঘা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তিকে ওজন কমানো, নিয়মিত হাঁটা এবং নির্দিষ্ট সময় পর পর পা উঁচু করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে
বিশ্লেষকদের মতে, এমন এক সময় প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে, যখন তিনি নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ট্রাম্পের স্বাস্থ্য নিয়ে আদৌ সবকিছু স্বচ্ছভাবে জানানো হচ্ছে কি না।
তবে হোয়াইট হাউস বারবার আশ্বস্ত করছে—ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও “পুরোদমে কর্মক্ষম” এবং “রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ফিট”।
শেখ ফরিদ