
ছবি: সংগৃহীত।
ফিট থাকতে হলে যে জিমে যেতে হবে বা প্রতিদিন দৌড়াতে হবে, এমন ধারণা অনেকেই পোষণ করেন। তবে দৌড়ানো সবার জন্য উপযোগী নয়—বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি কঠিনও হতে পারে, এবং চোট-আঘাতের ঝুঁকিও থেকে যায়। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে জাপানের বিশেষ হাঁটার কৌশল, যা কার্যকরভাবে শরীরচর্চার বিকল্প হতে পারে।
‘ইন্টারভ্যাল ওয়াকিং ট্রেনিং’: জাপানি হাঁটার কৌশল:
জাপানি গবেষকদের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘ইন্টারভ্যাল ওয়াকিং ট্রেনিং’। এই কৌশলে হাঁটার গতি নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিবর্তন করে শরীরচর্চা করা হয়। মূলত দিনে ৩০ মিনিট হাঁটা, যার মধ্যে কিছু সময় দ্রুত গতিতে ও কিছু সময় ধীর গতিতে হাঁটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:
২০০৭ সালে জাপানে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা সপ্তাহে অন্তত চার দিন এই হাঁটার রুটিন অনুসরণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রক্তচাপ হ্রাস পেয়েছে এবং অ্যারোবিক ক্ষমতা প্রায় ৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া, এভাবে হাঁটার ফলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং পেশি ও অস্থিসন্ধির শক্তি যথাক্রমে ১৩ শতাংশ ও ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা দৌড়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না বা পারছেন না, তাঁদের জন্য এই ধরনের হাঁটা হতে পারে একটি কার্যকর ও নিরাপদ বিকল্প।
এই পদ্ধতিতে হাঁটার সময় গতি পরিবর্তনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি সেশন নির্দিষ্ট সময় পরপর দ্রুত ও ধীরে হাঁটার সমন্বয়ে গঠিত।
প্রথমে মাঝারি গতিতে ৩ মিনিট হাঁটুন। এমন গতিতে হাঁটুন, যাতে আপনার সর্বোচ্চ শক্তির ৭০ শতাংশ ব্যবহার হয়।
এরপর ধীরে গতিতে ৩ মিনিট হাঁটুন, যেখানে আপনার শক্তির প্রায় ৪০ শতাংশ খরচ হবে।
এই দুটি ধাপ বারবার পুনরাবৃত্তি করুন এবং মোট সময় ৩০ মিনিট পর্যন্ত বজায় রাখুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিতভাবে এই কৌশল অনুসরণ করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ, হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং সামগ্রিক ফিটনেস উন্নয়নে এটি বড় ভূমিকা রাখতে পারে। যারা হাঁটা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই পদ্ধতি হতে পারে সহজ ও উপভোগ্য শরীরচর্চার মাধ্যম।
মিরাজ খান