ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সিঙ্গাপুরে ভারতীয় কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্ঘটনা জালিয়াতির অভিযোগ তোলার একদিন পর মালিকের রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ২৩ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৭:৪৩, ২৩ জুলাই ২০২৫

সিঙ্গাপুরে ভারতীয় কর্মীর বিরুদ্ধে দুর্ঘটনা জালিয়াতির অভিযোগ তোলার একদিন পর মালিকের রহস্যজনক মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে এক নারী ভারতীয় কর্মীর বিরুদ্ধে কর্মস্থলে ভুয়া দুর্ঘটনার অভিযোগ তোলার একদিন পর মারা গেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়া এর বরাতে জানা গেছে, ওই নারী, জেন লি, "সুমো সালাদ" নামের একটি খাবারের দোকানের মালিক ছিলেন। মৃত্যুর একদিন আগে তিনি ফেসবুকে বিস্তারিতভাবে অভিযোগ করেন, তাঁর এক ভারতীয় কর্মী প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। ৪০-এর ঘরে থাকা এই নারী ছিলেন দুই সন্তানের মা। সিঙ্গাপুর পুলিশ এই ঘটনাকে “অস্বাভাবিক মৃত্যু” হিসেবে তদন্ত করছে।

মৃত্যুর একদিন আগে জেন লি তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ভারতীয় নারী কর্মী শরণ কিরণজিৎ কৌর ইচ্ছাকৃতভাবে একটি দুর্ঘটনা সাজিয়ে কর্মস্থলে আঘাত পেয়েছেন বলে মিথ্যা দাবি করেন, যাতে করে তিনি ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।

তিনি লেখেন, “আমি কখনও ভাবিনি কেউ শুধুমাত্র টাকার জন্য এতটা প্রতারণা করতে পারে। শরণ কিরণজিৎ কৌর আমার কাছে চাকরির জন্য এসেছিলেন। চুক্তি শেষ হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে তিনি হঠাৎই দাবি করেন, তিনি ময়লা ফেলতে গিয়ে এস্কেলেটরে পা পিছলে পড়ে যান। অথচ ওই দিনই তার আগেভাগে ছুটি নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি ইচ্ছে করে থেকে যান। এরপরই আমার মনে হয় পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত।”

জেন লি আরও দাবি করেন, কৌর ও তাঁর স্বামী—দুজনই ভারতীয় এবং তারা একটি আইনজীবী ফার্মের সহায়তায় পুরো জালিয়াতির পরিকল্পনা করেন, যারা লোকজনকে শেখায় কীভাবে আহত হওয়ার ভান করে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হয়।

লি বলেন, তাঁর কাছে এমন ভিডিও ফুটেজ আছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, কৌর আসলে একেবারেই আহত নন। “আমি নিজে দেখেছি তিনি রান্না করছেন, হাঁটাচলা করছেন, কোনো সমস্যাই নেই। কিন্তু যখন চিকিৎসকের সামনে যান, তখনই আচরণ বদলে গিয়ে নাটকীয়ভাবে ব্যথা করার ভান করেন, খুঁড়িয়ে হাঁটেন।”

তিনি আরও লেখেন, এই প্রতারণার লক্ষ্য মূলত ছোট ব্যবসার মালিকরা। “যদি তারা দেখে কোনও ব্যবসার ইনস্যুরেন্স নেই, তখন ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার চেষ্টা করে। আর ইনস্যুরেন্স থাকলে, গুরুতর আহত হওয়ার গল্প বানিয়ে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দাবি করে।”

জেন লি সিঙ্গাপুরের মন্ত্রণালয় ও পুলিশকে অনুরোধ জানান যেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়। তিনি লেখেন, “আমি ভয় পাচ্ছি আমি শেষ ব্যক্তি হব না—এরা আরও অনেক নিরীহ ছোট ব্যবসার ক্ষতি করতে পারে।”

সিঙ্গাপুরের শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা কর্মীর ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে মামলার সত্যতা যাচাই করছে। “কেউ যদি ওয়ার্ক ইনজুরি ক্লেইম সিস্টেমের অপব্যবহার করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলে জানায় মন্ত্রণালয়। তারা আরও জানায়, যদি কোনও মালিক কর্মীদের ভুয়া দাবি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন, তাহলে তারা MOM-এর সহায়তা চাইতে পারেন।

আবির

×