
পথচারী নিরাপদে চলার পথ ফুটপাত। বড় বড় ব্যস্ততম শহরগুলোতে ফুটপাত ব্যবস্থা রাখা হয় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য। যাতে লোকজন রাস্তা ধরে না হেঁটে ফুটপাত দিয়ে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। ফুটপাত শুধু পথচারী চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা যায় এর ভিন্ন চিত্র। ফুটপাত দখল করে পণ্যের পসরা সাজিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছেন কতিপয় ব্যবসায়ী। উচ্ছেদ করে দিলেও আবার তারা ফুটপাত দখল করে ব্যবসাবাণিজ্য পরিচালনা করেন। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ কিংবা দলীয় নেতা-কর্মীদের হাতে কিছু উপঢৌকন ধরিয়ে দিলে ফুটপাতে ব্যবসা তাদের জন্য সহজ ও নিরাপদ হয়ে যায়। আর এতে করে ভুক্তভোগি হয় সাধারণ জনগণ। ফুটপাত হয়ে পড়ে পথচারী চলাচলের অনুপযোগী। যার ফলস্বরূপ পথচারীদের পড়তে হয় নানাবিধ বিড়ম্বনায়। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে থাকায় জনসাধারণকে ফুটপাত ব্যতিরেকে মূল রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গিয়ে নানাবিধ দুর্ঘটনার কবলে পতিত হতে হয়। শুধু তাই নয় ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনাও গড়ে তুলে কেউ কেউ। ফলে রাস্তার পরিধি ছোট হয়ে যায় সৃষ্টি হয় যানজট। ফুটপাত থেকে এ ব্যবসায়ীদের সকালে তুলে দিলে বিকালে আবার তারা পণ্যের পসারা সাজিয়ে বসে যান। এদের মধ্যে কেউ কেউ আবার ফুটপাতের স্থায়ী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত, যারা স্থানীয় প্রভাবশালী মহলকে দৈনিক অথবা মাসিক চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। আর যারা ফুটপাতের অস্থায়ী ব্যবসায়ী তাদেরকে সবসময় থাকতে হয় একটা দৌড়ানোর ওপর। আজ এক জায়গায় তো কাল আরেক জায়গায়। নিম্ন আয়ের এসকল মানুষ পেটের দায়ে ফুটপাতে ব্যবসা করে দিনশেষে চাল ডাল নিয়ে ঘরে ফিরে। তাদের প্রতি মানুষের একটা সহানুভূতি কাজ করে বিধায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ক্রোধান্বিত হওয়া যায় না। কারণ ফুটপাতে যারা ব্যবসা করেন তারা কোনো এলিট শ্রেণি নয়। এরা সমাজের খেটে-খাওয়া লোকজন। এদের পুঁজি সামান্য। দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করার ক্ষমতা সামর্থ্য তাদের অনেকেরই নেই। তাই প্রশাসন কিংবা সরকারের উচিত তাদেরকে একটা নিদিষ্ট জায়গা বা এলাকা নির্ধারণ করে দেওয়া যাতে সেখানে তারা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন। এতে করে তারা নিজেরা যেমন নিরাপদ থাকবে তেমনি জনসাসাধারণকেও দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
গোয়াইনঘাট, সিলেট থেকে
প্যানেল