
ছবি সংগ্রহীত
ফুটপাত বলতে যা বোঝায় তা হলো, রাস্তার দুই পাশে পথচারীদের চলাচলের উপযোগী জায়গা বা আইল্যান্ড। এখান দিয়েই নিরাপদে নির্বিঘ্নে পথচারীরা চলাচল করেন। নগর-মহানগরের পাকা রাস্তাগুলোর দুপাশের আইল্যান্ড নির্মাণ করা হয় পথচারীর চলাচলের তাগিদেই। পথচারীর চলাচলের জায়গাগুলো বেদখল করে ব্যবসা করছে এক শ্রেণির হোমরাচোমরা ব্যবসায়ী। ফুটপাত দখল করে নানান পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করছে হাজারো মানুষ। নগর-মহানগরে ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় মাস্তান, স্থানীয় দলীয় ক্যাডার ও পুলিশ প্রশাসন। এছাড়াও যত্রতত্র গড়ে ওঠা দোকানদারদের ভালো-মন্দ দেখার জন্য সাইনবোর্ডসর্বস্ব ব্যবসায়ী সংগঠন নগর-মহানগরে বিদ্যমান। এ সকল সংগঠন ফুটপাত ব্যবসায়ীদের জায়গা বরাদ্দের ব্যবস্থাসহ চাঁদার হার নির্ধারণ করে থাকেন। ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দৈনিক-সাপ্তাহিক-মাসিক ভিত্তিতে চাঁদার হার নির্ধারিত হয়। রাজনৈতিক নেতার চাঁদা তোলেন দলীয় কর্মী। মাস্তান-ক্যাডারের চাঁদা আদায় করেন উঠতি বয়সের মাস্তান অথবা ক্যাডার। পুলিশের চাঁদা তোলেন অলিখিত পদবিধারী ক্যাশিয়ার পদ-পদবিধারী ব্যক্তিরা। টু পাইস ইনকামের জন্য নগর-মহানগরে ফুটপাত ইজারা প্রথা চালু করে দোকান পসরার ব্যবস্থা করছে মহল্লার রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও লোকাল পুলিশ প্রশাসন। নগর-মহানগরের হাজারো ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় নেতা ও পুলিশ প্রশাসন। নগর-মহানগরের রাস্তায় ফুটপাতগুলোর পাশে বিভিন্ন সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বাউন্ডারী ওয়ালসংলগ্ন ফুটপাতের জায়গাগুলোতে ছোট ছোট পিলার তুলে সার্টার ব্যবহার করে স্থায়ীভাবে দোকান ভাড়া দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানের মহল্লার নেতা ও পুলিশ প্রশাসন। সম্প্রীতি গুলিস্তান ফার্মগেট এলাকায় ফুটপাত উচ্ছেদের অভিযান চালানো হলেও ফুটপাত দখলমুক্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিভাগ ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ অভিযান চালালেও ফুটপাত হকারদের পুনরায় দখলে চলে যায়। ফুটপাত হকারদের কবল থেকে উদ্ধার করার একমাত্র উপায় হলো নগর মহানগড়ের স্ব-স্ব মহল্লার রাজনৈতিক নেতাদের স্বদিচ্ছাই পারে নগর মহানগড়ের ফুটপাত হকারমুক্ত করতে।ফুটপাত কমতে কমতে পথচারীর চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পথচারীদের সাপের মতো এঁকে বেঁকে চলাচল করতে হচ্ছে। ফুটপাতের পথচারীর জায়গা সঙ্কুচিত হচ্ছে। এর মধ্যে খরার ঘা সৃষ্টি করেছে মোটরসাইকেল আরোহীরা। রাজধানীর ঢাকা শহরে এ ঘটনা এখন নিত্যদিনের। ঢাকা শহরে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ লোকজন আসা-যাওয়া করেন। এরা ফুটপাত দিয়ে চলার সময় আহত হলে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না। অতিথি পাখি যেমন আসা ও ফেরত যাবার সময় পাখি শিকারিদের জালে আটকা পড়ে তেমন অবস্থাই সৃষ্টি হচ্ছে পথচারীদের বেলায়। ফুটপাত দখল করে ব্যবসা বন্ধে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি প্রয়োজন। এ অবস্থায় পরিবর্তন চায় নগরবাসী। ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য নগর ভবন থেকেও বিভিন্ন সময় উদ্যোগ করা হয়েছে। দোকানপাট তুলে দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন পর আবার ব্যবসায়ীরা ফুটপাত বেদখল করে দোকানে পসরা সাজিয়ে চুটিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ফুটপাত মুক্ত করতে নগর ভবন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। ফুটপাত দখলমুক্ত করার দাবি পথচারীদের।
সিরাজগঞ্জ থেকে
প্যানেল