ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

হাঁটাপথের হাট

মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ২ জুলাই ২০২৫

হাঁটাপথের হাট

বাঙালির গ্রামীণ ও শহরতলির জীবনে হাঁটাপথের বিকিকিনি এক অনন্য সংস্কৃতি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতীক। এই হাঁটাপথের দোকানপাট, হকারদের হাঁকডাক, আর ক্রেতা-বিক্রেতার চেনা মুখের গল্প গড়ে তোলে এক জীবনচিত্র। আধুনিক বাজার ব্যবস্থার দ্রুত বিস্তার হলেও হাঁটাপথের বিকিকিনি এখনো টিকে আছে স্বকীয়তা নিয়ে।
হাঁটাপথের বিকিকিনি সাধারণত সকালে অথবা বিকেলে জমে ওঠে। কোথাও সাপ্তাহিক হাট, আবার কোথাও প্রতিদিনই বসে  ছোটখাটো দোকান। কেউ বিক্রি করছে তাজা শাকসবজি, কেউ ফলমূল, আবার কেউ হাঁড়ি-পাতিল, কাপড়চোপড় বা হস্তশিল্পের জিনিসপত্র। নগরীর ফুটপাত থেকে শুরু করে গ্রামের মাটির রাস্তা। সবখানেই চোখে পড়ে এই প্রাণচাঞ্চল্যময় বিকিকিনি।
হাঁটাপথের বিকিকিনি শুধু কেনাবেচার জায়গা নয়, বরং মানুষের সামাজিক মেলবন্ধনের ক্ষেত্রও বটে। এখানে পণ্যদ্রব্যের দামদর ঠিক করার মধ্যেই তৈরি হয় সম্পর্কের উষ্ণতা। গ্রামের মানুষ  যেমন বাজারে এসে গল্পগুজব করে, তেমনি শহরের ব্যস্ত মানুষও হাঁটাপথের দোকানে একটু দম নেওয়ার সুযোগ খুঁজে পায়। তবে হাঁটাপথের বিকিকিনির সুবিধার পাশাপাশি কিছু সমস্যা ও চ্যালেঞ্জও আছে। হকারদের অনিয়মিত বসা, যানজটের সৃষ্টি, আর কখনো কখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্ছেদ অভিযান এই বিকিকিনিকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দেয়। তবু জীবনের প্রয়োজনে, জীবিকার তাগিদে এই বিকিকিনি প্রতিদিন নতুন করে বেঁচে ওঠে।
পরিশেষে বলা যায়, হাঁটাপথের বিকিকিনি কেবল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আধুনিক নগরায়নের সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিকিকিনিকে টিকিয়ে রাখা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সকলের জন্য নিরাপদ ও উপকারী করে তোলা জরুরি।
ফেনী থেকে

প্যানেল

×