ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

ছোট ও নিরুত্তাপ বাজেট

ড. জাহাঙ্গীর আলম

প্রকাশিত: ১৯:২০, ১৪ জুন ২০২৫

ছোট ও নিরুত্তাপ বাজেট

বৈষম্যহীন ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য নয়া বাজেট পেশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এটি তার এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটের আকার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে মোট বাজেটের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। ১৫ বছর পর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা ৬২১ দশমিক ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকায়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। চলতি বছরের বাজেটের তুলনায় তা ৭ হাজার কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৪৬ হাজার কোটি বা ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।। এ বাজেটের আকার হচ্ছে জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল জিডিপির ১৪.২০ শতাংশ। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত নয়া বাজেট ওই বাজেট থেকে ১০০৫ গুণ বেশি। এবারের বাজেটে আনুষ্ঠানিকতা কম। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই বললেই চলে। পক্ষে-বিপক্ষে কোনো মিছিল, সেøাগান নেই। বলা যায়, এটি উত্তাপহীন বাজেট।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাজেট দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নে। এর প্রধান কারণ, কাক্সিক্ষত মাত্রায় রাজস্ব আহরণে ঝুঁকি। এবারের বাজেট অনেকটা সংকোচনমূলক। এতে কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যান্য বছর ১২-১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হয় বাজেটে। এবার তা ঋণাত্মক শূন্য দশমিক ৮৮ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির হার গড়ে প্রায় ১০ শতাংশ ধরে নিলে বাজেটের প্রবৃদ্ধি হবে আরও বেশি নেতিবাচক। দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনায় নিলে অযৌক্তিক ব্যয় কমানোর মাধ্যমে একটি আঁটসাঁট বাজেট প্রস্তাবই এবার কাক্সিক্ষত ছিল। বাজেট বাস্তবায়নের গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বর্তমান চড়া মূল্যস্ফীতি অবদমনে প্রস্তাবিত বাজেট সহায়ক হবে। 
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর উৎস থেকে আসবে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এ লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি  হতে হবে এবারের সংশোধিত লক্ষ্য মাত্রার ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং মূল লক্ষ্য মাত্রার ৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক আর্থিক সংকট, নিম্ন জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে এ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা খুব কঠিন হবে। কর ও ভ্যাটের আওতা ও হার বৃদ্ধি এবং করছাড়ের মাত্রা হ্রাসের কারণে মানুষের ওপর আর্থিক চাপ বাড়বে। তবে এ চাপ জনগণকে সইতে হবে। বর্তমানে আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত ৭ শতাংশের মতো। এটি এশিয়ার সর্বনিম্ন। ক্রমাগত বাজেট ঘাটতি হ্রাস এবং দেশি ও বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানোর জন্য কর-জিডিপির অনুপাত বাড়িয়ে ন্যূনপক্ষে ২০ শতাংশে উন্নীত করা দরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে কর-জিডিপির অনুপাত হবে ৯ শতাংশ। নয়া বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্যান্য বছরের তুলনায় তা কম। এ ধারা অব্যহত থাকলে বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।
গত বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। পরে তা নামিয়ে দেওয়া হয় ৬ দশমিক ৫ শতাংশে। সংশোধিত বাজেটে আরও নামিয়ে করা হয় ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রাথমিক হিসাবে অর্জনের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রাক্কলন হলো ৩ দশমিক ৩ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। আগামী বছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। তবে আগামী বাজেট বাস্তবায়নের হার ও গুণগত মান সন্তোষজনক না হলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য মাত্রা অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে। প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বাস্তবে এটা হয়তো আরও বেশি হবে। বর্তমানে গড় মূল্যস্ফীতির হার প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। গত মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, এপ্রিলে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। জুন শেষে এ হার ৮ শতাংশে নেমে আসবে বলে ধারণা করছে সরকার। গত মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ, এপ্রিলে যা ছিল ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। সম্প্রতি দেশে কৃষির উৎপাদন বিশেষ করে বোরো ধানের উৎপাদন ভাল হওয়ায় আগামী দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার নমনীয় থাকবে বলে আশা করা যায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩১ শতাংশ। পরিচালন বা অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৬৯ শতাংশ। এটি ভারসাম্যপূর্ণ নয়। এবার পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে বেশি বরাদ্দ রাখা। উদ্দেশ্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদান। বর্তমানে সচিবালয় ও এনবিআরের স্থাপনাগুলোতে যা ঘটছে, দেশবাসী তা প্রত্যক্ষ করছেন। তাদের সেবার মান সম্পর্কেও করদাতারা অবহিত আছেন। এমতাবস্থায় পুরনো কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা আর না বাড়িয়ে নতুন কর্মসংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ করাই যুক্তিপূর্ণ নয় কী? দেশের শতকরা ৯০ ভাগ বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সরকারের কোন প্রণোদনা থাকবে কী? অনেকে মনে করেন, সরকারি কর্মচারীদের ৫-১০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা কিংবা বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের প্রস্তাব বৈষম্যমূলক এবং মূল্যস্ফীতির সহায়ক।
প্রস্তাবিত কৃষি বাজেট গতানুগতিক। আগামী অর্থবছরে কৃষি বিষয়ক ৫টি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। এ টাকা মোট বরাদ্দের ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মধ্যে শস্য কৃষি খাতের জন্য রাখা হয়েছে ২৭ হাজার ২২৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাকি ২ দশমিক ৪১ শতাংশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বন ও পরিবেশ, ভূমি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এটা অপ্রতুল। দিনের পর দিন বাজেটে বৃহত্তর কৃষি খাতের হিস্যা হ্রাস পেয়েছে। ২০১১-১২ সালে বৃহত্তর কৃষি খাতের হিস্যা ছিল মোট বাজেটের ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তা নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ নেমে এসেছে। উচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি হ্রাস ও এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য এবং পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য কৃষি খাতে ন্যূনপক্ষে মোট বাজেটের ১০ শতাংশ অর্থ নিয়োজিত করা উচিত।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ফসল খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ২৪,৯৩৫ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭,২৬১ কোটি টাকা। এবার নয়া বাজেটে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ২৪১ কোটি টাকা। যা গত বছরের মূল বাজেট থেকে ২০ কোটি টাকা কম। এভাবে কৃষি ভর্তুকির ক্রম হ্রাস অনাকাক্সিক্ষত। তাতে বিঘ্নিত হবে কৃষির উৎপাদন। খাদ্যনিরাপত্তা ব্যাহত হবে। কৃষি খাতে কাক্সিক্ষত মাত্রায় উৎপাদন বাড়িয়ে যেতে হলে কৃষি ভর্তুকি খাতে মোট বাজেটের কমপক্ষে ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করা উচিত।
কৃষিখাতে করমুক্ত আয় সীমা ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এটি খুবই যৌক্তিক মনে হয়েছে। কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে রেয়াতি শুল্ক সুবিধা প্রদান করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার তৈরির যন্ত্রাংশ আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের কথা বলা হয়েছে। এগুলো কৃষি উন্নয়নে সহায়ক হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। এ খাতে মোট বরাদ্দ ৮,৩২২ কোটি টাকা, বেড়েছে ১,৬৮৪ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে খাদ্য গুদামের ধারণক্ষমতা খুবই কম, ২১ দশমিক ৮৬ টন। নতুন অর্থবছরে তা ৩৭ লাখ টনে উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। তাতে খাদ্যশস্যের বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং পণ্যমূল্যে স্থিতিশীলতা আসবে। বর্তমানে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ৫ কোটি টন। এর ন্যূনতম ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য গুদামের ধারণক্ষমতা নিরন্তর বাড়িয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে জোর দেওয়ার কথা বলা হলেও বরাদ্দ বেড়েছে স্বল্পই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগে এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটের ১২ দশমিক ১ শতাংশ। গত বাজেটের তুলনায় তা মাত্র শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। এ বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। ইউনেস্কোর সুপারিশ মতে জিডিপির ৪-৬ শতাংশ এবং জাতীয় বাজেটের ১৫-২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা খাতের দুটো বিভাগে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। আগের বাজেটের তুলনায় তা ৫০০ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেশি। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের মতে, জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ বা জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ করা উচিত।
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বেড়েছে মাত্র ১ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। এটা যথেষ্ট নয়। প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা ও সমাজকল্যাণ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। গত সংশোধিত বাজেটে ছিল  ৪৩ হাজার ২০৮ কোটি টাকা। বরাদ্দ বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে একত্রে, ৫টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে (সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু, খাদ্য, দুর্যোগব্যবস্থাপনা ও মুক্তিযুদ্ধ)। এক্ষেত্রে বর্তমানে বয়স্ক ভাতা প্রতি মাসে দেওয়া হচ্ছে ৬০০ টাকা আর বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতা ৫৫০ টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে যথাক্রমে ৫০ ও ১০০ টাকা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এ ভাতার পরিমাণ ন্যূনপক্ষে ১০০০ টাকা হওয়া উচিত। মোট উপকার ভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা অপ্রতুল। ইতোপূর্বে টিসিবির বাদ পড়া ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড কবে হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা দেয়া হয়নি। এ বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক বৈষম্য হ্রাস। তবে এ সম্পর্কে তেমন কর্মসূচির উল্লেখ নেই।
আগামী অর্থবছর হতে প্র্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। মহিলা ও ৬৫ বছরের বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতাদের করমুক্ত আয় সীমা বেড়ে হবে ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ কর হার আগের মতো ৩০ শতাংশ রাখা হলেও কর ধাপ ৭টি থেকে কমিয়ে ৬টি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বেশি আয়ের করদাতাদের ওপর কর প্রদানের চাপ বেড়ে যাবে। তবে নতুন নির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর আগামীতে এ বিষয়ে ভিন্ন ঘোষণাও আসতে পারে। 
বাজেটের আকার ছোট। তবে অলীকতা বিবর্জিত ও বাস্তবসম্মত। এতে ব্যক্তির খেয়ালের চেয়ে অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতি হ্রাস ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন বাজেটের মূল লক্ষ্য। এটি বাস্তবায়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হলে ইস্পিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। ত্বরান্বিত হবে সার্বিক উন্নয়ন। 
লেখক : একুশে পদকপ্রাপ্ত কৃষি অর্থনীতিবিদ, সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং সাবেক উপাচার্য, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ

প্যানেল

×