ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অন্তঃসত্ত্বার যত্ন

উবাইদুল্লাহ তারানগরী

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ২১ মে ২০২৫

অন্তঃসত্ত্বার যত্ন

একজন গর্ভবতী নারী কেবল একজন মানুষ নন- তিনি একটি নতুন জীবনের ধারক। তাঁর শরীরে বেড়ে ওঠা প্রাণটি আমাদের ভবিষ্যৎ। সন্তানের জন্মদানের পথটি নারীর জীবনের সবচেয়ে কষ্টকর ও গৌরবময় অধ্যায়। এই কষ্টের সঙ্গে কোনো কিছুই তুলনীয় নয়। তবু প্রশ্ন থাকে- এই মহামূল্যবান নারীর প্রতি আমরা কি যথেষ্ট সম্মান ও সহানুভূতি দেখাতে পারছি? বাসা থেকে কর্মক্ষেত্র, রাস্তাঘাট থেকে গণপরিবহন। প্রতিটি জায়গায় গর্ভবতী নারীরা অবহেলার শিকার হন। দাঁড়িয়ে থাকা ক্লান্ত এক নারীকে আমরা অনেকেই দেখি না, কিংবা দেখেও দেখি না। বসার জায়গা ছেড়ে দেই না, কেউ কেউ আবার কটাক্ষ করতেও পিছপা হই না। সমাজ যেন এখনো শেখেনি। গর্ভবতী নারীর প্রতি কেমন আচরণ করা উচিত। এখনো সন্তানসম্ভবা নারীরা নানা কটূক্তি, মানসিক চাপ ও অযাচিত প্রত্যাশার ভারে নুয়ে পড়েন। তাঁদের প্রতি দায়িত্বশীল না হয়ে বরং দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়। সন্তান ছেলে না হলে মাকে দোষারোপের মতো কুসংস্কারও বহু জায়গায় টিকে আছে। এমন অমানবিকতা আমাদের সভ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে। এই মানসিকতা বদলাতে হবে। গর্ভবতী নারী কোনো বোঝা নন; তিনি এক যোদ্ধা, যিনি জীবনের সূচনা বয়ে আনেন। তাঁকে সম্মান না জানিয়ে, সহানুভূতি না দেখিয়ে আমরা নিজেদের মানবিকতারই অপমান করি। এই সময়ে তাঁদের প্রয়োজন সহানুভূতি, শারীরিক-মানসিক পরিচর্যা, পুষ্টিকর খাবার এবং নিরাপদ প্রসবের নিশ্চয়তা। একটুখানি বসার জায়গা, কয়েকটি সদয় শব্দ, একটি সুরক্ষিত পরিবেশ- এই ছোট বিষয়গুলো এক বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
আসুন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই। গর্ভবতী নারীর পাশে দাঁড়াই। কারণ, তিনিই আগামীর মানবতার নির্মাতা। একটি জীবনকে সুন্দরভাবে পৃথিবীতে আনতে সহায়তা করাই তো আমাদের সভ্য দায়িত্ব।
ধোবাউড়া, ময়মনসিংহ থেকে

প্যানেল

×