ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানো জরুরি

সাজ্জাদুল ইসলাম ইয়ামিন

প্রকাশিত: ১৯:৫৮, ২০ মার্চ ২০২৫

বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানো জরুরি

নদীমাতৃক এই বাংলাদেশ। বিভিন্ন নদ-নদীতে ভরপুর অপার সৌন্দর্যময় এই দেশটি। বাংলাদেশের তেমনি একটি নদী বুড়িগঙ্গা। নদীটি ঐতিহাসিক এবং বানিজ্যিক কারনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকার পাশ দিয়ে প্রবাহিত নদীটি অর্থনীতি, ইতিহাস এবং বাংলার সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত। বুড়িগঙ্গা নদীটি ধলেশ্বরী নদীর প্রধান ধারা ছিল, ধলেশ্বরী পদ্মার সাথে যুক্ত থাকায় একে পদ্মা নদীর শাখাও বলা হয়। নদীটির প্রস্থ গড়ে ৩৫০-৪০০ কিলোমিটার এবং দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৪ মিটার। নদীটির শুরু মুন্সীগঞ্জ থেকে এবং ঢাকার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে ধলেশ্বরী নদীর সাথে মিশেছে। মোগল আমলে ঢাকা শহরের বিকাশ ঘটে এই নদীর তীরেই। প্রাচীনকাল থেকেই নদীটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য, নৌপরিবহন ইত্যাদির সাথে যুক্ত রয়েছে। বর্তমানে, মানবসৃষ্ট দূষণে ছেঁয়ে গেছে পুরো বুড়িগঙ্গা। বিভিন্ন শিল্প কারখানা, ট্যানারি, গার্মেন্টসের রাসায়নিক বর্জ্য এবং পলিথিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফেলা ময়লার ফলে বুড়িগঙ্গা এখন দূষিত। এছাড়া ধলেশ্বরী ও পদ্মা থেকে পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় দূষণের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে স্থানীয় জনগণ এবং নৌপরিবহনে ভ্রমণকারী যাত্রীদের ওপর।
বর্তমানে পানির মান ভয়াবহ রকমের খারাপ হওয়ায় জনসাধারণ এবং প্রকৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। মৎস্য এবং নদীতে বসবাসরত বিভিন্ন জলজ প্রাণী এখন বিলুপ্ত প্রায়। নৌপথে ভ্রমণকারী যাত্রীবৃন্দের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তীব্র দুর্গন্ধ সহ্য করতে হয়, যা যাত্রীদের জন্য কষ্টকর। আমাদের অসচেতনতার কারণে একটি নদী তার চিরচেনা রূপ হারিয়ে ফেলেছে। যত্রতত্র বর্জ্য নিক্ষেপ দূষণকে আরও বৃদ্ধি করে। নৌযানগুলোও দূষিত পানি অহরহ ব্যবহার করছে। যানগুলোতে তৈরিকৃত খাবারে এই পানির ব্যবহার হচ্ছে। এতে আমাদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নদীটির তলদেশে ১০-১২ ফুট প্লাস্টিকের স্তর রয়েছে। যা নদীর পানিকে কালো রঙে রূপান্তর করে। আমরা নদীটিকে বাঁচাতে চাই। দেখতে চাই তার পুরনো রূপ। এর জন্য সরকারকে নতুন করে পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি জনসাধারণকে নদী সম্পর্কে সচেতন করতে হবে এবং নদীর দ্বারা আমাদের উপকারের বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। তা না হলে অচিরেই কালো পানিতে ছয়লাব নদীটি মানুষ এবং প্রাণীদের জীবননাশের কারণ হবে।
দর্শন বিভাগ
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।

×