ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

সেদিন তাঁর প্রত্যাবর্তন, জনতার ভালোবাসার জোয়ারে লেখা হবে ইতিহাস

আবদুল আজিজ

প্রকাশিত: ১২:২২, ১৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১২:২৪, ১৪ জুলাই ২০২৫

সেদিন তাঁর প্রত্যাবর্তন, জনতার ভালোবাসার জোয়ারে লেখা হবে ইতিহাস

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অদৃশ্য কিন্তু প্রবল আবেগ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশপন্থী মানুষের মনে প্রবহমান, তা হচ্ছে দেশনায়ক তারেক রহমানের ফিরে আসার প্রতীক্ষা। বহু বছর ধরে সুদূর প্রবাসে থাকা এই নেতার প্রতিটি কথন, প্রতিটি নির্দেশনা আজ কোটি মানুষের হৃদয় নাড়া দিচ্ছে। তাঁর দেশে ফিরে আসার দিনটি হবে শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার প্রত্যাবর্তন নয়—তা হয়ে উঠবে এক যুগান্তকারী মুহূর্ত, হয়ে উঠবে গণবিস্ফোরণ, যা গণমানুষের আবেগ, প্রত্যাশা ও আদর্শের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকবে।

তারেক রহমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের বাহিরে অনন্য এক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছে। তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রক্ত ও ব্যক্তিত্বের উত্তরাধিকার, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী মা মাটি ও মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও নেতৃত্ব বিএনপিকে শুধু সংগঠিত করেনি, বরং নতুন প্রজন্মকে যুক্ত করেছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে।

২০০৭ সালের পর পটপরিবর্তনের নানা নাটকীয়তার মধ্যে তাঁকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। কিন্তু প্রবাসে থেকেও তিনি দলের হাল ধরেছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনের ধারা বজায় রেখেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক উপায়ে। যেদিন তারেক রহমান বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখবেন, সেদিন শুধু বিএনপি নয়—সমগ্র বাংলাদেশ উৎসবমুখর হয়ে উঠবে। প্রতিটি জেলা, থানা, ইউনিয়ন থেকে মানুষ ঢাকায় ছুটে আসবে। ঢাকার রাজপথে লাখো জনতা ব্যানার, ফেস্টুন, স্লোগানে মুখর করে তুলবে পুরো শহর।

তরুণ-তরুণী, মুক্তিযোদ্ধা, কর্মজীবী নারী—সবাই অংশ নেবেন এই স্মরণীয় মুহূর্তে। মানুষের মুখে থাকবে একটিই উচ্চারণ— “স্বাগতম তারেক ভাই, বাংলাদেশে স্বাগতম।”

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন শুধু আবেগের বহিঃপ্রকাশ নয়—এটি রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত বয়ে আনবে বলেই বিশ্বাস করি। তাঁর প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নতুন গতি পাবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সংগঠন আরও সুসংহত হবে, কৌশলগতভাবে আরও কার্যকর হবে আন্দোলন ও নির্বাচনী প্রস্তুতি।

এটি বর্তমান সরকারের জন্যও হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা—গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপস নয়, বরং নতুনভাবে আন্দোলন-সংগ্রামের পথচলা শুরু হবে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে—তারেক রহমান এক সম্ভাব্য জাতীয় নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। জাতীয় গণ্ডি পেরিয়ে হয়ে উঠবেন বিশ্বের নেতা। ঠিক যেমন শহীদ জিয়া আমাদের বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করানোর জন্য নিরলস কাজ করেছেন তেমনিভাবে তারেক রহমান যখন সুযোগ পেয়েছেন ছুটে গেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। শহর থেকে গ্রামে, ইউনিয়নে মানুষের কথা শুনেছেন, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখনও নিপীড়িত মানুষের পাশে আমরা একটা কণ্ঠস্বর শুনতে পাই “বোন, আমি তারেক বলছি”

তারেক রহমান অনেকের কাছেই শুধুই একজন নেতা নন—তিনি একটি স্বপ্ন, একটি অধিকার, গণতন্ত্রের প্রতীক, তিনি নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর, কৃষকের গোলা ভরা ধানের খুশি। অনেক তরুণ, যারা তাঁর রাজনীতির শুরুর সময়ের সাক্ষী নয়, তারাও আজ তাঁর আদর্শে প্রভাবিত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে হাজারো কনটেন্ট—ভাষণ, সাক্ষাৎকার, বিশ্লেষণ। একটি ডিজিটাল আন্দোলন গড়ে উঠেছে, যা বাস্তব রাজনীতির ভূমি প্রস্তুত করছে। বাংলাদেশের প্যারাডাইম শিফট রাজনীতির ধারক হয়ে কাজ করছেন তিনি। তাঁর কথাবার্তায় কাজেকর্মে যে রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা দেখতে পাচ্ছি, এটাই মূলত নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত। বাংলাদেশকে বিএনপির প্রস্তাবিত ৩১ দফার আলোকে সাজিয়ে তোলার যে মহান পরিকল্পনা তিনি হাতে নিয়েছেন তা অভূতপূর্ব। এই ৩১ দফা প্রস্তাবনা তিনি দিয়েছেন স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের আমলেই, এমনকি সকল রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করে গড়ে তুলেছেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য। আগামীতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসলে সকলকে নিয়ে একসাথে দেশ পরিচালনার চিন্তা আছে তাঁর মাথায়।
এই প্রত্যাবর্তন কেবল একজন রাজনৈতিক ব্যক্তির দেশে ফেরা নয়—এটি হবে তাঁদের স্বপ্নপূরণ, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছেন। এটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক ত্যাগের স্বীকৃতি।

তারেক রহমানের দেশে ফেরা মানে ইতিহাসের নতুন অধ্যায় লেখা—যেখানে থাকবে লড়াই, কিন্তু থাকবে উজ্জ্বল আশার আলো।
তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা হয়ে থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, যেদিন তারেক রহমান আসবে সেদিন বাংলাদেশ হাসবে। সেই দিন লাখো কণ্ঠে একই স্লোগান ধ্বনিত হবে—
“এই বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট-প্রান্তর আজ বলছে, ফিরে এসো তারেক ভাই, আমরা প্রস্তুত।”

লেখক: আবদুল আজিজ, রাজনীতি ও সমাজ বিশ্লেষক 

নোভা

×