
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৪ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রেফতার
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের ৪ জন ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় নগদ ১৪ লক্ষ টাকা ও একটি বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় উখিয়া ১১ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনী এ অভিযান পরিচালনা করে।
সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নেতা নবী হোসেন একজন কুখ্যাত ডাকাত ও মাদক কারবারি। তার হাতে খুন হয়েছে বহু তাজা প্রাণ। তার নেতৃত্বে ক্যাম্পে গড়ে উঠেছে সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে মাদকের চালান। ওই বাহিনীর কাছে রয়েছে দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র।
স্থানীয়দের মতে, এই সশস্ত্র ক্যাডারদের হুমকির মধ্যে তটস্থ থাকতে হয় সাধারণ রোহিঙ্গাদের। ভয়ে কাতর থাকতে হয় সবসময়। ইচ্ছে থাকা সত্বেও সাধারণ রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনের আগ্রহ দেখাতে পারছেনা বলে একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছে।
ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এপিবিএন সদস্যরা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরে যারপরনাই চেষ্টা চালাচ্ছে। তারপরও নবী হোসেন গ্রুপের কিছু সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা বিভিন্ন অপরাধ করে চলছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধির তথ্যের ভিত্তিতে মাঝে মাঝে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে থাকে। রবিবারও উখিয়া ১১ নং ক্যাম্পে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে চার রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিদেশি অস্ত্র। জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৪ লক্ষ টাকা। ধৃতরা কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ক্যাম্প ১১ এর সি/৬ ব্লকে মাঝি কেফায়েতের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফডিএমএন ক্যাম্প ১১-তে সেনাবাহিনী ও এপিবিএন এর যৌথ অভিযানে নবী হোসেন গ্রুপের চার সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
আটক চারজনই কুখ্যাত রোহিঙ্গা ডাকাত নবী হোসেন দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে যৌথ বাহিনী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো: আনাস, মনসুর আহমেদ, ইয়াসের আরাফাত ও কেফায়েত উল্লাহ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নবী হোসেন দলের সঙ্গে অস্ত্র কেনাবেচার কথাও স্বীকার করেছে।
অভিযানের সময় অস্ত্র ব্যবসায়ী ইলিয়াস পালিয়ে গেলেও নবী হোসেনের আস্তানায় অস্ত্রটি সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। উদ্ধারকৃত বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রটি মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।
একজন রোহিঙ্গা মৌলবি নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এই নবী হোসেন গ্রুপের ক্যাডারদের কাছে জমা রয়েছে অঢেল টাকা। তারা মাদক বিক্রি করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলছে ক্যাম্পে।
বিশ্লেষকরা বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে খাল কেটে কুমির আনার মত অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা স্থানীয়দের পাত্তাই দিচ্ছে না। দিনমজুর থেকে শুরু করে এমন কোন কাজ নেই, যা রোহিঙ্গারা করছেনা। এক কথায় শ্রমবাজার রোহিঙ্গাদের দখলে। সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। তারা আশ্রয় পেয়ে বন্দুক যোগাড় করছে। মাদক কারবার করে টাকার পাহাড় গড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে একসময় রোহিঙ্গাদের কন্ট্রোল করা কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এখনও সময় আছে, রোহিঙ্গাদের লাগাম টেনে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন সমাজপতিরা।
তাসমিম