
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল সম্প্রতি এক টেলিভিশন টকশোতে মন্তব্য করেছেন, বিএনপিকে সহজে ক্ষমতা থেকে সরানো বা নিঃশেষ করা যাবে না। তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের রেশ ধরে প্রশ্ন তোলেন, "আওয়ামী লীগ যখন নেই, তখন কারা বিএনপিকে তুড়ি মেরে ওড়াতে চাইছে?" বাবুল আরও জোর দিয়ে বলেন, বিভিন্ন অপরাধের দায় সরকারের, বিএনপির নয়।
শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, বিএনপি বারবার প্রমাণ করেছে কিভাবে প্রতিকূলতা পেরিয়ে টিকে থাকতে হয়। তিনি উল্লেখ করেন, ৮২ থেকে ৯০-এর সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে বিএনপি সক্রিয় ছিল, যখন আওয়ামী লীগ ও জামায়াত স্বৈরাচারকে বৈধতা দিয়েছিল। ওয়ান-ইলেভেনের সময় বিএনপি এবং এর দুই নেত্রীকে 'মাইনাস' করার যে চেষ্টা হয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে বিএনপিকে 'মাটির সাথে মিশিয়ে দেবার' বহু ষড়যন্ত্র ও চেষ্টা হয়েছে, কিন্তু তা সফল হয়নি। তার মতে, বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দলকে এভাবে নিঃশেষ করা অসম্ভব।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে শহিদুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ করেন, বিএনপিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিদ্রুপ করা হচ্ছে। তিনি জিয়াউর রহমানের ছবি পদদলিত করা, ইশরাককে হত্যার হুমকি দেওয়া এবং ফেসবুকে বিএনপির চামড়া খুলে নেওয়ার মতো উস্কানিমূলক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন। এসবের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার সমালোচনা করেন তিনি।
মিটফোর্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, এটি একটি বেদনাদায়ক ব্যাপার এবং তার দলের কেউ এই ঘটনাকে সমর্থন বা জাস্টিফাই করেনি। তিনি জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে (যাদের অপরাধ এখনো প্রমাণিত হয়নি) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নিহত ব্যক্তি যুবদলের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও, হত্যাকারীরা এখনো স্পষ্টত চিহ্নিত হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনার পরপরই তারেক রহমানকে জড়িয়ে অপপ্রচার ছড়ানো হয়েছে, যেখানে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, "খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনি তারেকের রক্ষা নাই।" তিনি খুলনায় যুবদল নেতা মাহবুব মোল্লাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা এবং চাঁদপুরে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনাগুলোতে সমমানের প্রতিবাদ না হওয়ায় প্রশ্ন তোলেন। তার মতে, "পরিকল্পিতভাবে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য মিটফোর্ডের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছে।"
সবশেষে শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা মারামারি বা সংঘাতে জড়িয়ে মারা গেলেও, সেই দায় রাষ্ট্রের নেওয়া উচিত। তিনি দাবি করেন, বিএনপি প্রতিটি ঘটনা আমলে নিচ্ছে, দায় নিচ্ছে এবং তাদের জনপ্রিয়তা কমছে বলে তারা উদ্বিগ্ন। তবে তিনি মনে করেন, আইন-শৃঙ্খলা ও খুনের বিচার নিশ্চিত করার দায় সরকারেরই। তিনি জানান, বিএনপি প্রায় ৪,০০০ লোককে বহিষ্কার করেছে, কিন্তু তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যককেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তার মতে, "বিএনপির নয়, দায় সরকারের।"
তথ্যসূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=JKIpBYtr_4A
সাব্বির