ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

পাঠাভ্যাস বাড়ানো চাই

বিলকিস নাহার মিতু

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পাঠাভ্যাস বাড়ানো চাই

বইমেলায় সদ্যপ্রকাশিত বই হাতে কবি লায়লা ফারজানা

একটা সময় ছিল যখন মানুষ অবসরে বইকে বিনোদন হিসেবে নিত। বইয়ের সঙ্গে ছিল তুমুল সখ্য কিন্তু বিংশ শতাব্দীর এই যুগে বই পড়ার আগ্রহ কারও নেই বললেই চলে। প্রতি বছর বইমেলায় স্থান পায় নিত্যনতুন বই। কিন্তু বইমেলায় যেন পাঠক-ক্রেতার থেকে উঠতি লেখকের সংখ্যাই বেশি, আর যারা আসে ভিড় জমাতে তারা নিতান্তই সেলফি বা ব্লগ ভিডিও বানাতে আসে। বর্তমানে বই পড়ার প্রবণতা কমে যাবার বহুবিধ কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান কারণ হলো প্রযুক্তির সহজলভ্যতা। আগে অবসরে বই খোঁজা লোকজনও এখন ফোনেই বন্দি হয়ে যায় বিনোদন পেতে। তার দেখা দেখে সেই পরিবারের শিশুরাও ফোন আসক্তি বা কম্পিউটার গেম এসবেই ব্যস্ত থাকে। ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক হাওয়ার্ড জ্যাকবসন অত্যন্ত হতাশা নিয়ে বলেছিলেন, ‘২০ বছরের মধ্যেই ফেসবুক, টুইটার শিশুদের মূর্খ বানাবে’। আমরা খেয়াল করলে দেখব সেটাই হচ্ছে এখন সমাজে। আরেকটু খেয়াল করলে দেখতে পাই, বইমেলাতে বর্তমানে ভালো মানের লেখক পাওয়া দুষ্কর। কেউ বই লেখে বুড়ো লোক পটিয়ে বিয়ে করার গল্প নিয়ে, কেউবা প্রাক্তন প্রেমিকার গল্প নিয়ে লেখে আবার কেউ জেল থেকে বেরিয়ে জেলের কাহিনী নিয়ে বই লেখে। এসব কারণেও পাঠকের বই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে বই পড়া আর আকর্ষণীয় লাগে না কারণ সে ঘরে বসেই জানতে পারে কে কি লিখছে বা কি বই বের হবে। বই পড়া একটা ধৈর্যের কাজ কিন্তু নেট দুনিয়ায় কয়েক সেকেন্ডের রিলসে আসক্ত ব্যক্তি কখনোই ধৈর্য নিয়ে বই পড়ে তার রহস্য উদঘাটন করার মতো ধৈর্য শক্তির পরীক্ষা দেবে না।   
বই পড়ার প্রবণতা যেভাবে কমে যাচ্ছে তাতে অতি সত্বর এর ব্যবস্থা না নিলে আমাদের সমাজ তথা দেশটাই এক সময় মেধাশূন্য হয়ে যাবে। তাই বই পড়ার আগ্রহ বাড়িয়ে তোলার জন্য নিতে হবে পদক্ষেপ। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাহিত্যের বই পড়ানো এবং এর জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা চাই। পরিবারের লোকদের সচেতন হতে হবে তাদেরও পড়ার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে, সঙ্গে সন্তানদেরও।
 
দৌলতপুর, খুলনা থেকে

×