ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা

-

প্রকাশিত: ২০:৪১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা

সম্পাদকীয়

২৩ বছর পাকিস্তানের জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে, বারবার মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অধিকারবঞ্চিত বাঙালির স্বাধীনতা এনেছিলেন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সারাবিশ্বে তাঁর পরিচিতি ছিল শোষিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে। তাঁর কন্যা এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায়। চারবারের প্রধানমন্ত্রী। মানবিক মনোভাবের কারণে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এখন বিশ্বে একটি বহুল পরিচিত ও আলোচিত নাম। এক কঠিন সংগ্রামের পথ বেয়ে তিনি আজ স্বপ্রতিভায় স্বমহিমায় বিকশিত সারাবিশ্বে।

পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। ৪২ বছর ধরে একটানা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে থাকা, পরপর চারবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা সত্যিই গর্বিত হওয়ার বিষয়। পিতার মতো দুর্জয় সাহস নিয়ে দেশের রাজনীতি ও জনগণের পক্ষে নিজের সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। জীবনের সমূহ ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে চলেছেন নিরন্তর। 
তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে বহুবার। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাও হয়েছে। তবে বেঁচে গেছেন তিনি অলৌকিকভাবে। সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ঘাতকের ঘৃণ্য অপতৎপরতা সফল হয়নি। তাঁর চারদিকে এখনো পরাক্রান্ত বহু শত্রু। যুদ্ধের ময়দানে তিনি একাই লড়ছেন মাথা উঁচু করে। সাম্রাজ্যবাদের কাছে নত হওয়া, স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ এবং দেশ ও জনগণের বিপদের মুহূর্তে দেশত্যাগ বা রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হওয়ার কোনো ঘটনা নেই তাঁর জীবনে। ভূগোলের গ-ি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে বিশ্ব ভাবনাকে সামনে রেখে বক্তব্য রাখতেও পিছপা হননি কখনো।

অতি সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রদত্ত ভাষণে তিনি অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। জঙ্গিবাদ, দ্বন্দ্ব,    হানাহানি, সংঘাত-সংঘর্ষ, বারুদের বিস্ফোরণের বিপরীতে শান্তির বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে যে জঙ্গিবাদের বিস্তার তা নির্মূলে তিনি সর্বদা সোচ্চার। দেশের সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের তিনি দমন করেছেন। শেখ হাসিনা আজ নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যে কারণে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের জন্য রোল মডেল।
তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২৪ ডলারের।  স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ সবক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে দ্রুত উন্নয়ন। অর্থনৈতিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। গড় জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধাপে ধাপে পূরণ হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও রূপকল্প ২০২২-এর সকল কর্মসূচি। দারিদ্র্য হ্রাস, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণ, আঞ্চলিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ- এসব কারণেই বাংলাদেশ বিশে^র দরবারে বিশেষ অবস্থান ও মর্যাদা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট. মেট্রোরেলসহ যোগাযোগ ও উন্নয়নে দৃশ্যমান হচ্ছে আমূল পরিবর্তন। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অসাধারণ অবদানের জন্য জাতিসংঘের এসডিজি পুরস্কারসহ অর্জন করেছেন ৩৮টির বেশি অ্যাওয়ার্ড ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে হয়েছেন মাদার অব হিউম্যানিটি- মানবতার জননী।  
আজ শেখ হাসিনার জন্মদিন। ৭৭ বছরে পদার্পণ করলেন তিনি। শেখ হাসিনার মধ্যে সহজ-সরল মহত্ত্ব রয়েছে, যা সকলের শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা আকর্ষণ করে। সমগ্র জাতিকে নিষ্ক্রিয়তা, নির্জীবতা, বিমূঢ়তা থেকে মুক্ত করার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশ ও বাঙালির জাতির প্রতীক। একই সঙ্গে বিশ্বেরও। বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের মূল নায়ক শেখ হাসিনা বিশ্ব রাষ্ট্রনায়কোচিত অভিধার দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাবেনÑ এই প্রত্যাশা জন্মদিনে।