ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডিজিটাল ভূমিসেবা

-

প্রকাশিত: ২০:২৩, ১ এপ্রিল ২০২৩

ডিজিটাল ভূমিসেবা

সম্পাদকীয়

দেশে ভূমিসংক্রান্ত বিষয়ে বেশিরভাগ সময় মানুষ হয়রানির শিকার হন। এই সমস্যা নিরসনে সরকার ভূমিবিষয়ক ডিজিটাল সেবা চালু করেছে অনেক আগেই। ভূমিবিষয়ক আগের জটিলতাগুলো মানুষের জন্য সহজ করতে ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা প্রদান শুরু করেছে। এ ছাড়াও অনেক আইন-কানুন-বিধি সংশোধিত হয়েছে ও হচ্ছে। ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের একটি মাইলফলক হচ্ছে অনলাইনে জমির খাজনা প্রদান।

অনলাইনে খাজনা প্রদান পদ্ধতি চালু হওয়ায় মানুষকে আর জমির খাজনা দিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যেতে হচ্ছে না। এতে করে মানুষের সময় সাশ্রয় হচ্ছে এবং কমছে যাতায়াত খরচ। আগের চেয়ে বর্তমানে ভূমিসেবা তুলনামূলক সহজ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ভূমিসংক্রান্ত প্রায় সব কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। তবে অনেকেই সেবাগুলো কিভাবে গ্রহণ করতে হয় তা না জানার কারণে এর সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। 
জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানাসংক্রান্ত সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার অবসান এবং ঝামেলামুক্ত ও দ্রুত ভূমিসংক্রান্ত সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ সময় তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনেক উদ্ভাবনী উদ্যোগ উদ্বোধন করেন। এগুলো হলোÑ লক্ষ্মীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতিস্তম্ভ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স, রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন ইন্টারকানেকশন, স্মার্ট ল্যান্ড ম্যাপ, স্মার্ট ল্যান্ড রেকর্ডস, স্মার্ট ল্যান্ড পিডিয়া, স্মার্ট ল্যান্ড। 
উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে ভূমিসেবার ডিজিটালইজেশন অপরিহার্য। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মাঠপর্যায়ে ডিজিটাল ভূমিসেবা প্রদান কিছুটা চ্যালেঞ্জিংও। কারণ, এখনো মানুষের মাঝে ভূমিবিষয়ক পর্যাপ্ত সচেতনতা তৈরি হয়নি। এক্ষেত্রে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে  দেশের নাগরিক, সরকারি সংস্থা ও স্টেকহোল্ডারদের অবহিত, ভূমি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং ভূমিসংক্রান্ত বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা জরুরি।

দীর্ঘদিন ধরে ভূমি ব্যবস্থাপনায় যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার সমাধান হয়ত অল্পদিনে সম্ভব নয়। কিন্তু সর্বত্র ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে এসব সমস্যার সমাধান হবে এবং কাজে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সততা ও ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন। ভূমিবিষয়ক সব রেজিস্টার অনলাইনে বা ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়ে আসার পর একটি নির্ভুল ডাটাবেজ তৈরি করা হবে। তখন গ্রাহকদের অনেক সহজে ভূমিসেবা দেওয়া সম্ভব হতে পারে। হয়ত সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন দেশের শতভাগ মানুষ ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের সুফল ভোগ করবে। মুক্তি পাবে ভূমি সেবাসংক্রান্ত দীর্ঘদিনের হয়রানি থেকে।

×