ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দূর হোক বাধা

মোঃ মাসুদ হোসেন

প্রকাশিত: ২১:২২, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ২১:২৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

দূর হোক বাধা

বাংলার ফুটবল বাঘিনীরা

এশিয়া কাপ ক্রিকেট জয়ের পর এবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে বাংলার ফুটবল বাঘিনীরা। বিশ্ব দরবারে উড়িয়েছে লাল-সবুজের বিজয় নিশান। অসীম বিক্রমে বজায় রেখেছে মাতৃভূমির সম্মান। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে সম্মানিত করার এই  নেপথ্য বাঘিনীরা অন্ধকার থেকে উঠে এসেছে আলোকিত মঞ্চে। তারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রাম থেকে উঠে আসা। এই কিশোরীদের কারও কারও বাবা কৃষক,  ছোট ব্যবসায়ী কিংবা স্বল্প বেতনের চাকরি করে।

তৃণমূলের অভাবী পরিবারের কিশোরীরাও যে সুযোগ  পেলে জাতীয় মর্যাদা বয়ে আনতে পারে  সেটা  দেখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের আনন্দের উৎস মূলত ক্রিকেটকে ঘিরেই হয়েছে। জগৎ দরবারে আমাদের ফুটবল মান এখনও হতাশাজনক। এই হতাশার ভিতরে মেয়েরা  গৌরবময় সাফল্য বয়ে এনেছে।  দেশবাসীকে খুশি করার জন্য পুরস্কার দিয়েছে। বিশেষত এবারের প্রমীলা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দেশবাসীকে একের পর এক আনন্দঘন মুহূর্ত উপহার দিয়েছে আমাদের মেয়েরা।

বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে অসংখ্য কিশোরী আছে যাদের ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সকল সম্ভাবনা অকালেই বিনষ্ট হয়ে যায় সামাজিক কিছু কুসংস্কারের কারণে। শুধু গ্রামের কিশোরী নয়, শহরেও কিশোরীদের খেলাধুলায় অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। আর  মেয়েকে  তো  তেমন জায়গায়  খেলাতে পাঠানো যায় না নিরাপত্তার কারণেই।
স্কুল পর্যায়ে মেয়েদের  খেলাধুলাকে উৎসাহিত করার জন্য প্রয়োজন  মেয়েদের জন্য আরও বেশি টুর্নামেন্টের আয়োজন। প্রয়োজন প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশে  খেলাধুলায়  যে  মেয়েরা এগিয়ে এসেছেন তাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত পরিবার  থেকে এসেছেন। এদের  যেমন রয়েছে পুষ্টি ঘাটতি তেমনি রয়েছে সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও। এজন্য খেলাধুলায় ভাল এমন মেয়েদের জন্য বিশেষ বৃত্তির ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। স্থানীয় পর্যায়ে কিশোরীদের বিভিন্ন ক্রীড়ানুষ্ঠানের আয়োজন করলে সামাজিক বাধা ও কুসংস্কারগুলো কাটবে।

আন্তর্জাতিকভাবে আমরা দেখেছি সাফ দেশসমূহের মধ্যে আয়োজিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের কিশোরীরা  দেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে। তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের  মেয়েরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই শুধু ফুটবল বা ক্রিকেট নয়, নারীদের জন্য ভলিবল, বাস্কেটবল, হকি, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন এবং এ্যাথলেটিকস এ বিশেষ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। নদীনালার দেশ বাংলাদেশ। গ্রামের মেয়েরা প্রায় সকলেই সাঁতার জানে। সাঁতারে ভাল করার অনেক সম্ভাবনা আমাদের রয়েছে। তাই পরিবার, সমাজ ও  দেশ  থেকে নারী ক্রীড়াঙ্গনে  দেয়া  হোক উৎসাহ।

চাঁদপুর সদর  থেকে

×