
চাই সচেতনতা
অসুখ তো আর এমনি এমনি হয় না। মানুষই তা ডেকে আনে। মানুষের অসচেতনায় হয়। ডেঙ্গুর কথাই ধরা যাক। ডেঙ্গু হয় এডিস মশার কামড়ে। এডিস মশা জন্মে আবদ্ধ পানিতে। বাসার বাড়ির চারপাশ নোংরা। ছাদে পানি জমে আছে। টবের মধ্যে পানি উপচে পড়ছে। এসবই আমাদের দেখা জিনিস। কিন্তু আমরা কতটুকু সচেতন? নিজ উদ্যোগে, নিজেকে, পরিবারকে ভাল রাখার জন্য আমরা মোটেই উদ্যোগী না। যখন কর্তৃপক্ষ অপরিষ্কার রাখার জন্য জরিমানা করে। তখন ঘুম ভাঙ্গে। আবার পরিবারের কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় যখন। তখন তার কষ্ট থেকে আমরা তৎপর হই।
অথচ চারপাশটা পরিষ্কার রাখা একটুও কঠিন কাজ নয়। এই বিষয়ে ঢাকা শহরে বাড়িওয়ালারা বড়ই অলস, উদাসীন। বাড়িওয়ালা হিসেবে তাদের কোন উদ্যোগ নেই। দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রাখতে হয়। অনেকেই সেটা রাখেন না। যারা রাখেন সেখানে তাকানো যায় না। এত নোংরা, যা সিটি কর্পোরেশনের ময়লা ফেলার জায়গাকেও হার মানায়। প্রশ্ন হলো এই জায়গা তো সরকার এসে পরিষ্কার করে দেবে না। প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ফাঁকা জায়গা পরিষ্কার করা সরকারের পক্ষে সম্ভব কি? বাড়িওয়ালাই লোক দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার রাখতে পারেন। ভাড়াটিয়ারা কেন এখানে ময়লা, অর্বজনা ফেলেন বুঝতে পারি না।
শতভাগ না হোক। সচেতন থেকে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকাংশ কমানো সম্ভব। আপনার, আমার বাসায় কোথায় পানি জমে থাকতে পারে। আমরাই সবচেয়ে ভাল জানি। তাহলে কাজটা তো আমাদেরই করা উচিত। তাই নয় কি? নাকি আপনার বেডরুম এডিস মশার কারখানা। সে জন্যও সরকারকে দোষারূপ করবেন? কি করলে ডেঙ্গু জ্বর হবে না। এডিস মশা মারা যাবে। জন্মাবে না। কমবেশি আমরা সকলেই তা জানি। এই নিয়ে সংবাদপত্রসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে মিডিয়ায় প্রচারণার কমতি নেই।
কমতি যেটা আছে সেটা হলো নাগরিক সচেতনতা। পরিবার, সমাজ, দেশ সর্বোপরি নিজের জন্য যেটা করা জরুরী। সেটাই করা হচ্ছে না। ডেঙ্গু এমন কোন আহামরি রোগ নয় যা হলে মৃত্যু অবধারিত। সঠিক চিকিৎসায় ডেঙ্গু রোগী একদম সুস্থ হন। তবে বয়স্কদের বেলায় কিছুটা রিস্ক থেকেই যায়। সুস্থ হলেও ডেঙ্গুরোগীর শরীরে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। যা কাটিয়ে ওঠার জন্য তার পাশে থাকা জরুরী। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার দেয়ার প্রয়োজন হয়। ডেঙ্গু নিয়ে আসলে অতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
বরং সবচেয়ে জরুরী এডিস মশা যেন না জন্মে। সে জন্য যা যা করণীয়। তা নিজে যেমন করতে হবে। অন্যদের করতে উৎসাহিত করতে হবে। কারণ আপনার বাসা থেকে না হোক। অন্য কোথাও গেলেন। সেখান থেকেও এডিস মশার কামড় খেয়ে আসতে পারেন। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই এই সময়।
বনানী, ঢাকা থেকে