মরিয়ম মেরিনা
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ স্লোগানটা কেবল কি স্লোগান-ই থেকে যাবে? মানুষ সড়ক নিরাপত্তার বদলে শিকার হচ্ছে সড়ক পথে নতুন নতুন ভোগান্তির।
সম্প্রতি সড়ক পথে চলন্ত বাসের নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করে গণধর্ষণ বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন সংযোজন। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আর ডাকাতির ঘটনা পুরাতন অপরাধ হলেও একই মাসে একাধিকবার চলন্ত নৈশ দূরপাল্লার বাসে ডাকাতি হঠাৎ বেড়ে গেছে। আতঙ্কিত সাধারণ যাত্রী। বিশেষত নারীদের দূরপাল্লা যাত্রা করার মুখে বাধা হয়ে দাঁড়ালো ডাকাতির পাশাপাশি গণধর্ষণের ভয়।
এ রকম ঘটনা ঘটতে থাকলে বাসগুলোয় যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার পাশাপাশি একটা আবদ্ধ সমাজের আশংঙ্কা করা যায়। নারীরা বের হতে না পারলে পিছিয়ে যাবে সমাজ, দেশ। কিন্তু এ নিয়ে কতটুকু তৎপর কর্তৃপক্ষ? বাসমালিকদের গাফিলতিও কম না। মালিক সমিতি থেকে কড়া বিধিনিষেধ থাকার পাশাপাশি সচেতন থাকার কোন বিকল্প নেই। বাসকর্মীরা যাত্রীদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার দিকেও বিশেষ নজর রাখতে হবে। নৈশ দূরপাল্লার বাসে বাড়তি আয়ের আশায় মাঝ রাস্তায় যাত্রী তোলা, সিট সংখ্যার চেয়েও বাড়তি যাত্রী তোলা, বাসের গেটলক রাখা ইত্যাদি বিষয়গুলো দিকে নজর রাখা টহলকারী নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব।
এছাড়াও স্থানে স্থানে চেকপোস্টে কঠোর দৃষ্টি রাখা, রাতের রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা ও হাইওয়েগুলো সিসি ক্যামেরার আয়ত্তে আনা সড়ক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে।
শুধু নৈশবাসে নারী ধর্ষণ নয়, ডাকাতি বন্ধে কঠোর হতে হবে প্রসাশনকে। সাধারণ মানুষের কষ্টের টাকায় অর্জিত সম্পদ গন্তব্যে ফেরার আগেই যদি লুট হয়, সেই কষ্টের ভার কে নেবে? পত্রিকার পাতায় কিংবা টিভিতে চোখ রাখলেই খবর আসে অন্ধকার রাতে ডাকাতদের ডাকাতির পর ভুক্তভোগী আহাজারি। এতে শুধু মালামাল যায় না, ভুক্তভোগী প্রাণ নিয়ে ফিরবে কিনা তারও গ্যারান্টি থাকে না। মানুষের জানমালের পাশাপাশি নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় পরিবেশ বিঘিœত হাওয়ার আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।
অভিযুক্ত অপরাধে আসামিদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়ে প্রশাসন হয়ত কিছুটা রক্ষা করতে পারে এ ধরনের অরাজকতা।
একই সঙ্গে ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সড়ক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার বিকল্প নেই। এবং আমাদের সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিন্ত করা চাই।
কুড়িগ্রাম সরকারী মহিলা কলেজ থেকে