ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

১৪ কোটি টাকা বকেয়া

রাস্তা অবরোধ করে দ্রুত প্রশাসক বসানোর দাবি জনকণ্ঠ সাংবাদিকদের

প্রকাশিত: ২১:০৩, ৬ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ২১:০৩, ৬ আগস্ট ২০২৫

রাস্তা অবরোধ করে দ্রুত প্রশাসক বসানোর দাবি জনকণ্ঠ সাংবাদিকদের

ছবি: জনকণ্ঠ

১৪ কোটি টাকা বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও দ্রুত প্রশাসক বসানোর দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করে জনকণ্ঠ কর্র্তৃপক্ষকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন পত্রিকাটির সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বুধবার ইস্কাটন রোডের পত্রিকাটির ভবনের সামনে ১ ঘণ্টা কর্মবিরতি দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ জানান তারা। মানববন্ধন শেষে ভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন তারা। এতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ২০ মিনিট রাস্তা অবরোধ রাখার পর পুলিশ এসে আশ্বাস দিলে রাস্তা থেকে সরে আসেন তারা।

মানববন্ধনে আন্দোলরত সাংবাদিকরা বলেন, জনকণ্ঠ পত্রিকা জনগণের কণ্ঠ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা হয়নি। বিগত সময়ে পত্রিকাটি একটি দলের হয়ে দালালি করেছে অন্যদিকে তারা কর্মীদেরকে ঠকিয়েছেন। বছরের পর বছর অনেকের বেতন তারা দেয়নি, যখনই বেতন চাওয়া হয়েছে তখনই তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদেরকে চাকুরিচ্যুত করেছে। অতীতের মতোই বর্তমানেও তারা এই নীতি প্রয়োগ করছেন। বর্তমান বাংলাদেশে সেটা করা আর সম্ভব না আমরা আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছি, বার বার বেতনের জন্য মালিকপক্ষকে বলেছি। তবে তারা আমাদের কথা শোনেননি বরং প্রতিবাদ জানাতে গেলে চাকুরি থেকে অব্যহতি দেওয়ার হুমকি পেয়েছি। 

সাংবাদিকরা বলেন, আমরা মালিকের প্রতিপক্ষ নই। আমরা একটি বিষয় আগেও স্পষ্ট করেছি, এখনও বলছি—আমরা আমাদের প্রতিটি কর্মীর বেতন নিশ্চিত চাই। এই পত্রিকার মালিক স্বৈরাচারের সহযোগী ছিলেন, একটি দলের মুথপাত্র হয়ে সবসময় কাজ করেছে। আমরা চাই পত্রিকাটি বাংলাদেশের হয়ে কাজ করবে। পত্রিকার প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনসহ তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে। আমরা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ যারা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আছি আমরা আপনাদের পাশে আছি। আগামী তিনদিনের মধ্যে যদি তাদের দাবি না মেনে নেওয়া হয় তাহলে কীভাবে দাবি আদায় করে নিতে হয় তা আমরা জানি। স্বৈরাচারের হয়ে কাজ করে পত্রিকাটির মালিক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই ভবন যেহেতু রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি তার মানে ১৮ কোটি জনতার। তাই এ ভবনের সমস্ত সম্পত্তি ট্রাস্ট বোর্ডের আন্ডারে একটি ট্রাস্ট বোর্ড গঠন করার দাবি জানাচ্ছি। এখানে সমস্যা নিরসনে শীঘ্রই প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হোক।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগাঠনিক সম্পাদক এহসানুল হক নাহিদ বলেন, জনকণ্ঠ মালিককে বলতে চাই আপনাদের এই রাজত্ব তৈরি হয়েছে এ শ্রমিকদের শ্রম-ঘামে, আপনাদের এই রাজত্ব যদি টেকাতে হয় তাহলে কিন্তু শ্রমিকদের শ্রম-ঘামের মূল্য দিতে হবে। আমরা ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলতে চাই, এবার আর জনকণ্ঠ মালিককে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আপনাদের ন্যায্য দাবি অবশ্যই পূরণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, পাপের ভার যখন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় তখন মানুষ খুব ক্লান্ত হয়ে যায়, জনকণ্ঠের মালিকেরও ঠিক তেমন অবস্থা। এরা এখন আওয়ামী লীগের মতো ট্যাগ দেওয়া শুরু করছেন আবার বিভিন্ন জায়গায় বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন, মিথ্যা বলছেন যে জনকণ্ঠ নাকি বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি দখল করেছে। অথচ যাদেরকে ট্যাগ দেওয়া হয়েছে সবাই পেশাদার সাংবাদিক। এদের অনেকের সাংবাদিকতার বয়স ১২ বছর আবার কারো ১৭ বছর। প্রায় সকলেই পেশাদার সাংবাদিক। তাই আপনি ট্যাগিং দেওয়া রাজনীতি বন্ধ করুন। ট্যাগ দিয়ে শেখ হাসিনাও শেষ রক্ষা পায়নি, আপনিও পাবেন না। 

তিনি আরও বলেন, আমি এখানে এসে দেখেছি আপনাদের নিয়ে এখানকার কর্মীদের মাঝে কি পরিমাণ ক্ষোভ জমা হয়েছে, অথচ থাকার কথা ছিল ভালোবাসা। এই জনকণ্ঠকে ব্যবহার করে শত শত কোটি টাকা লোন নিয়েছেন ব্যাংক থেকে। আপনাদের হাজার হাজার কোটি টাকা, অথচ কর্মীদের বেতন দেননা। কেউ ৫ বছর আবার কেউ ১০ বছর, আবার কেউ টাকা না পেয়েই মারা গেছেন। হাজার কোটি টাকা করেছেন কর্মীদের অখুশি রেখে। উপরের মহান আল্লাহ কিন্তু দেখছেন, আপনার বিচার হবেই।

আবির

×