
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেছেন, ঢাকা উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী এক জন জাতীয় বীর। তিনি নারী হয়েও সমগ্র জাতির জন্য গর্বিত হয়ে চিরদিন মাইলস্টোন হয়ে থাকবেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য কবর জিয়ারত করতে এসেছি। তার পরিবারকে সমবেদনা জানাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সনের দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে পক্ষ থেকে মহিলাদলের আমরা এখানে এসেছি। শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। যারা স্বজন হারিয়েছেন তারাই বুঝেন, আমরা শুধু দেখছি আর বাকরুদ্ধ হয়ে কাঁদছি।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বগুলাগাড়ী চৌধুরী পাড়া এলাকায় মাহেরীন চৌধুরীর কবর জিয়ারত শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আফরোজা আব্বাস আরও বলেন, মাহেরীন চৌধুরী এতগুলা বাচ্চাকে বাঁচিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করে প্রমাণ করেছেন তিনি একজন মা তিনি একজন শিক্ষক। বাচ্চাগুলোর সঙ্গে তার রক্তের সম্পর্ক ছিল না তাদের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক ছিল। তিনি সেখানে সবগুলো বাচ্চাকে নিজের বাচ্চা মনে করে বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। শিক্ষকতা যে একটি মহান পেশা সেটার যে মহানুভবতা সেটা দেখিয়ে গেলেন তিনি। মানবতা কি সেটিও আমাদের শিখিয়ে দিলেন। তাই তিনি সকল শিক্ষক জাতির জন্য আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবেন। তিনি বলেন, আমরা নারী সমাজ গর্ব করে বলতে পারি তিনি একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন।
তিনি মাহেরীন চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন আমরা দেখতে পেলাম মালয়েশিয়া থেকে মাহেরীন চৌধুরীকে সম্মান দেওয়া হয়েছে এটা সব থেকে আগে আমাদের দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে হওয়া উচিত ছিল। প্রধান উপদেষ্টার উচিত ছিল তাকে প্রথম রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া, আমি মনে করি পাইলটের আগে তাকে দেওয়া উচিত ছিল। অর্থাৎ এটা জানাজানি হওয়া শুরু হলো তখন দেওয়া হয়েছে আসলে এটাতো উচিত ছিল না। এটা উচিত ছিল তাকে সবার আগে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া। তাকে অনেক দেরিতে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে। তার যেটা প্রাপ্যতা তাকে সেটা অবশ্যই দিতে হবে। এখন তাকে সরকার কি দিলো না দিলো আমরা সেটা কেয়ার করিনা তবে আমরা সমগ্র নারী সমাজ মনে করি তিনি আমাদের হৃদয়ে আছেন এবং থাকবেন। আমরা তার আদর্শকে ধারণা করে নারীদের এগিয়ে নিতে চাই।
এসময়ে উপস্থিত অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, নীলফামারী জেলার জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি তাসনিম ফৌজিয়া ওপেল, রংপুর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট জিনাত ফেরদৌস রোজিসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মরহুম মাহেরীর চৌধুরীর স্বামী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মনছুর হেলার, দুই ছেলে আয়ান রহীদ মিনাদ চৌধরী ও আদিল রহীদ মাহিন চৌধুরী এবং তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ।
উল্লেখ যে গত ২১ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। ওই ২০ জন শিক্ষার্থীন জীবন বাঁচিয়ে শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী দগ্ধ হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন রাতে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালে তিনি মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন।
ঘটনার পর দিন ২২ জুলাই বিকাল চারটায় মরহুম মাহেরীন চৌধুরীকে তার গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।
প্রকাশ থাকে যে, ২৩ জুলাই সকালে নীলফামারী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং এ দিন রাতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষে মরহুমার সমাধীতে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছিল।
মিরাজ খান