
ছবিঃ সংগৃহীত
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “লোকাল গভর্নমেন্ট মিনিস্টার আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়ার এপিএস-এর কাছেই রয়েছে ৩১২ কোটি টাকা, তাহলে মন্ত্রীর নিজের কত থাকতে পারে?”
ফজলুর রহমান আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই একবার বলেছিলেন, তাঁর ড্রাইভারের ৪০০ কোটি টাকা আছে। তখন তো আমরা ধরে নিয়েছিলাম, শেখ হাসিনার নিজের অবস্থান আরও অনেক উঁচুতে। এখন দেখা যাচ্ছে, এই টাকার অঙ্কগুলো বাস্তবেই দেশের উচ্চপর্যায়ের লোকদের কাছে পৌঁছে গেছে।”
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, “৫ আগস্ট আন্দোলনের সময় যারা বলেছিল জীবন দিবে, তারা কেউ কোনো দিন একটা আচড়ও খায়নি। আজকে যারা তখনকার সমন্বয়ক ছিল, তারা আজ বিলাসী জীবন যাপন করছে। অথচ রমনার পাশে রাতে শত শত মানুষ পত্রিকার কাগজ বিছিয়ে ঘুমায়। এক ছেলে, যার চাকরি নেই, আয় নেই, সে কোটি টাকার গাড়ি চালায়। দেশে গেলে তার জন্য ১৫০টি গাড়ি দরকার হয়, শতাধিক গেট দিতে হয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “বই ছাপানোর টাকার মধ্যেই কারও কারও নামে কোটি কোটি টাকা। এক ব্যক্তির নাম তানভর—যে একাই ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছে বলে শোনা যায়। আমি মুক্তিযোদ্ধা, জীবনে ৪০ লাখ টাকা একসাথে দেখিনি। ৪০০ কোটি টাকার কথা শুনলেই দম বন্ধ হয়ে আসে।”
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্মৃতি তুলে ধরে তিনি বলেন, “১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর কুশিয়ারা নদীর যুদ্ধে আমি ১৭০ জন পাকবাহিনীর সদস্যকে ধরেছিলাম। তিনটি স্টিমারে ২২ হাজার মন চাল ও গম এবং ১২০০টি রাইফেল আমরা উদ্ধার করেছিলাম। এসব অস্ত্র ও খাদ্যদ্রব্য নিয়ে আসা স্টিমার পরদিন ভারতীয় বিমান বাহিনী ডুবিয়ে দেয়। এই ইতিহাস আজও বহু মানুষ জানে।”
ফজলুর রহমান বলেন, “আমার ঘাটে ৫ হাজার মন চাল থাকলেও আমার ঘরে এক মণও ছিল না। বাবার অনুরোধে বাজার থেকে চাল কিনে খেতে হয়েছিল। এখন যেসব লোক হাজার কোটি টাকার মালিক, তারা আমাদের সেই ত্যাগের মর্যাদা দেয় না। প্রশ্ন হলো, আমরা কি শেখ হাসিনার শাসনের সময় বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হলাম, নাকি ৫ আগস্টের জয়ী পক্ষ ক্ষমতায় এসে আরও বেশি চরিত্রহীনতা তৈরি করল?”
মারিয়া