ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

ভবিষ্যতে সীমান্তে যাতে আর বাংলাদেশী হত্যার ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজারে হামলা বন্ধের দায়িত্ব তার নিজের বলে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, পূজা কমিটি চাইলে আগামী দুর্গাপূজায় মাদ্রাসার ছাত্ররা স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করতে রাজি আছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে দুর্গাপূজার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টাদ্বয় এসব কথা বলেন। 
সীমান্ত হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, বর্ডার কিলিং (সীমান্তে হত্যা) নিয়ে এখানে একটু আলোচনা হয়েছে। এজন্য শুধু আমি বলব, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট অথরিটিকে (কর্তৃপক্ষ) আদেশ করেছি। আমি আশা করব ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে না। সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ করব, ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে আপনারাও আমাকে সাহায্য-সহযোগিতা করবেন।
দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজারে হামলা বন্ধের দায়িত্ব তার নিজের বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন মাজারে হামলা হচ্ছে। সিলেটে শাহ পরানের মাজারেও হামলা হয়েছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শাহ পরানে যে হামলা হয়েছে সে বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে কোনো ধরনের হামলা যেন না হয়, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমার। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার সারাদেশে পূজামণ্ডপ হবে ৩২ হাজার ৬৬৬টি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৫৭টি, ঢাকা উত্তর সিটিতে হবে ৮৮টি। গত বছর পূজামণ্ডপ ছিল ৩৩ হাজার ৪৩১টি। তবে এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যা আরও বাড়বে। পূজা উদ্যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পুরো তালিকাটা এখনো দিতে পারেননি।
প্রতিমা নির্মাণের সময় থেকে নিরাপত্তা দেওয়া শুরু হবে জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পূজামণ্ডপগুলোতে কীভাবে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়, সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। নির্বিঘেœ পূজা উদ্যাপন এবং দুষ্কৃতকারীদের অশুভ তৎপরতা রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা। এবারের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগটি ভিন্ন হবে। বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিকদের মধ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব পালনের সময় বেঁধে দেওয়া হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের সংখ্যা (প্রতিটি মণ্ডপে) কমপক্ষে দিনে দুজন ও রাতে তিনজন থাকতে হবে। পূজা চলাকালে আজান ও নামাজের সময় বাদ্যযন্ত্র এবং মাইক বন্ধ রাখতে হবে। 
উপদেষ্টা আরও বলেন, পূজার সময় আরেকটি সমস্যা দেখা দেয়, যেহেতু আমাদের লোক যাওয়া-আসা করে, এপারের লোক ওপারে পূজা দেখতে যায়, আবার ওপারের লোক এপারে পূজা দেখতে আসে। এখানে সবাইকে আমি অনুরোধ করেছি, এবার আপনারা বর্ডার বেল্টে ভালো ভালো পূজামণ্ডপ করেন। যাতে আমাদের লোক ওপারে না যায় পূজা দেখার জন্য। ওপারের লোকও যেন এপারে না আসে, এটার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দুর্গাপূজার সময় নিরাপত্তায় আকাশে হেলিকপ্টার থাকবে। দশমীর দিন ডুবুরি থাকবে। আমরা এভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, মাদ্রাসার ছাত্ররা বলেছেন, পূজা কমিটি যদি চায় তারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে সম্মত আছে।
বিগত দিনে দুর্গাপূজার আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটা সামারি পাঠাতাম। সেখানে দুই থেকে তিন কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হতো। এবারই প্রথম পূজায় ৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা একটা তালিকা করে অসচ্ছল মন্দিরগুলোকে এই চার কোটি টাকা জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে বিতরণ করব।
এ ছাড়া আগে প্রতিটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো জানিয়ে খালিদ হোসেন বলেন, আমরা এই মিটিংয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়) প্রস্তাব পাঠাব আরও ২০০ কেজি করে যাতে চাল বাড়ানো হয়। না পারলে অন্তত ১০০ কেজি যাতে বাড়ানো হয়।
উপদেষ্টা আরও বলেন, কোনো দুষ্কৃতকারী যদি পূজা কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে, অন্তর্র্বর্তী সরকার তাদের কঠোর হস্তে দমন করবে। আমি আরও প্রস্তাব রেখেছি, এতদিন যে (পূজামণ্ডপে হামলাসহ হিন্দুদের ওপর নির্যাতন) বিচার হয় নাই তদন্ত করে এ বিষয়ে কোন কোন মামলা রয়েছে, সেটা আমাদের জানালে আমরা মনিটর করব। আমরা চাই বৈষম্যহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা হোক। সুনির্দিষ্ট (বিচার না হওয়া মামলা) করে উল্লেখ করে আমাকে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে কপি দিতে হবে। আমরা ব্যবস্থা নেব।

×