
হেমট্রামিক সিটি কাউন্সিল প্রাইমারী নির্বাচনে এক মেয়র সহ তিন বাংলাদেশীর বিজয়ে মিশিগান জুড়ে বাঙালীদের উল্লাস।। চুড়ান্ত লড়াই ৪ নবেম্বর
বিশ্ব মোড়ল রাষ্ট্র হিসেবে খ্যাত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্য মিশিগানের হেমট্রামিক সিটি কাউন্সিলের প্রাইমারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো গতকাল ৫ আগষ্ট।
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মনোরম পরিবেশে দিনব্যাপী চলা-২০২৫ ইং সালের ওই নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিল'র পদে বাংলাদেশী-ইয়েমেনী বংশোভূত বেশ ক'জন মার্কিন নাগরিক উভয় পদ গুলোতে একে অপরের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হন। এতে বাংলাদেশী বংশোভূত এক মেয়র সহ আরো দু'জন কাউন্সিল'র পদে জয়লাভ করেন।
বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান ও হবিগন্জের জামাই হিসেবে পরিচিত সাবেক কাউন্সিলম্যান মুহিত মাহমুদ ১ হাজার ৩৯ ভোট পেয়ে মেয়র পদে জয়ী হন।
যদিও তার আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী ইয়েমেনী বংশোভূত এডাম আল হারভি ১হাজার ৯'শ ৩১ ভোট পেয়ে একই সিটি কাউন্সিলের মেয়র পদে জয়ী হয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী বিধি মোতাবেক পরবর্তীতে আগামী ৪ নবেম্বর ফাইনালী নির্বাচনে এ দু'জন প্রার্থীর মধ্যে মূলত লড়াই হবে মেয়র পদে। তন্মধ্যে ভোটে বিজয়ী হয়ে একজন হবেন মেয়র পদে অধিস্থিত।
এদিকে একই প্রাইমারী নির্বাচনে মেয়র পদে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীকারী প্রার্থী যথাক্রমে বাংলাদেশী বংশোভূত খান হোসাইন ৪'শ ৭০ ও মিস্টার বাংলাদেশ পেয়েছেন ১'শ ০২ ভোট।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সিটির কাউন্সিলম্যান পদে প্রার্থী হয়ে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে রেকর্ড করে প্রথম স্থান অর্জন করলেন বৃহত্তর সিলেটের আরেক কৃতি সন্তান, সাবেক প্রো-মটেম আবু মুসা। তার প্রাপ্ত ভোট ১'হাজার ১'শ ২৯।
তাক লাগানোর মতো ভোট পেয়ে সাড়া ফেলেছেন একাধিকবার নির্বাচিত কাউন্সিলম্যাম বাংলাদেশী বংশোভূত সিলেটের বাসিন্দা নাঈম চৌধুরী। তার প্রাপ্ত ভোট ১'হাজার ৫৩।
এছাড়াও অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ইউসুফ সাঈদ পেয়েছেন ৯০'শ ৯ ভোট, মোতাহার ফাদেল ৯'শ, আব্দুল মালিক কাসেম ৮'শ ১৪, লুকমান সালেহ ৮'শ ১২, ডিয়ানি এলিজাবেদ ফ্রাকন ৭'শ ৫১, জোসেফ এ স্ট্রাজাল্কা ৭'শ ২৩, রেজাউল চৌধুরী ৬'শ ৫৪, রাস গর্ডন ৬'শ ৩৫, খালিদ আল কাসিমী ৪'শ ৭ এবং মাহফুজুর রহমান পেয়েছেন ২'শ ২৩ ভোট।
বলাবাহুল্য, হেমট্রামিক সিটির ওই নির্বাচনকে ঘিরে ছিল বহু জল্পনা-কল্পনা, হিসেব-নিকেশ ও কৌতুহল। অবেশেষে এই প্রাইমারী নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে আপাতত প্রবাসী বাংলাদেশীরা হাফ ফেলেছেন। সেই সাথে বাংলাদেশীদের বিজয় ও অগ্রগতিতে মিশিগানের হেমট্রামিক সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। চলছে মিষ্টি বিতরন ও হাস্যরসক কথার ফুলঝুড়ি।
উল্লেখ্য, মিশিগানে সবক'টি সিটি মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক বাংলা ভাষাভাষীদের বসবাস। তন্মধ্যে বাংলাদেশীদের সংখ্যা-ই বেশী। বাকীরা সনাতনধর্মীয়।
প্রবাসী কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ বাংঙালীরা এই নির্বাচনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে বলছেন, শুধু মিশিগানে নয়, এমন নির্বাচন গুলোতে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ আরো বেশী মাত্রায় রুপ ধারন করে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী তথা বাঙালীদের অবস্থান সংহত হবে। যা জাতীয় নির্বাচনেও বাংলাদেশী-বাঙালীদের ভোট এক বিশাল ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে। তবে অহেতুক তুচ্ছ ঝুট-ঝামেলা বা বিনা কারনে গ্রুপিংয়ের মতো বিষয়গুলো সমাধান না হলে বাংলাদেশীদের নিয়ে সাধারন প্রবাসীদের স্বপ্ন তিমিরেই থেকে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন দৃঢ় ইস্পাতের মতো ঐক্যবদ্ধ মানবিক একটি সফল কমিউনিটির উদাহরন সৃষ্টি করা।
রাজু