
ছবি: সংগৃহীত।
খিদে পেলে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া অনেক সময়ই চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততায় অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস বা ফাস্টফুডের দিকে ঝুঁকে পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিদের জন্য প্রাকৃতিক ফল, বিশেষ করে কলা ও খেজুর হতে পারে সহজ ও কার্যকর বিকল্প। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—এই দুই ফলের মধ্যে কোনটি খিদে মেটাতে এবং স্বাস্থ্য রক্ষায় বেশি উপকারী?
কলা: সহজলভ্য ও শক্তিদায়ী ফল
স্বাদে মিষ্টি ও সহজে হজমযোগ্য কলা প্রাকৃতিক শক্তির এক চমৎকার উৎস। পুষ্টিবিদদের মতে, একটি মাঝারি আকারের কলায় রয়েছে প্রায় ৮৯ কিলোক্যালোরি শক্তি, যা শরীরকে দ্রুত কর্মক্ষম করে তোলে।
পুষ্টিগুণ:
* সমৃদ্ধ পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬ ও সি
* উচ্চমাত্রার ফাইবার যা হজমে সহায়ক
* প্রাকৃতিক চিনি (গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ, সুক্রোজ) যা তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
* হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
* খেলোয়াড় ও ব্যায়ামরতদের জন্য উপযোগী স্ন্যাকস
খেজুর: ক্ষুদ্র অথচ পুষ্টিময়
মুসলিম বিশ্বে রমজান মাসে খেজুরের ব্যবহার বহুল হলেও, এটি সারা বছরই স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে বিবেচিত।
পুষ্টিগুণ:
* প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ২৮২ কিলোক্যালোরি
* আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্সে পরিপূর্ণ
* উচ্চমাত্রার প্রাকৃতিক চিনি ও খাদ্যআঁশ রয়েছে
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
* দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে
* অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতায় উপকারী
* অন্ত্র পরিষ্কারে সহায়ক
* মানসিক চাপ হ্রাস ও মস্তিষ্কের শক্তি যোগায়
পুষ্টিবিশেষজ্ঞরা জানান, “ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কলা তুলনামূলকভাবে ভালো। তবে যাদের রক্তশূন্যতা বা দুর্বলতা রয়েছে, তাদের জন্য খেজুর বেশি কার্যকর। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের উভয় ফলই পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।”
খিদে মেটাতে ও স্বাস্থ্য রক্ষায় কলা এবং খেজুর—দুই-ই উপকারী। তবে ব্যক্তির শারীরিক চাহিদা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পুষ্টি প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নেওয়াই শ্রেয়। অতএব, খাবারের সময় প্যাকেটজাত চিপসের বদলে হাতে তুলুন একটি কলা বা কয়েকটি খেজুর—শরীর ও মনের জন্য দুটিই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
মিরাজ খান