
ছবি:সংগৃহীত
বয়স বাড়লে আমরা অনেকেই দেখি—আগের মতো সহজে কিছু করা যাচ্ছে না। হাঁটা ধীরে হয়, ভার তুলতে কষ্ট হয়। এর প্রধান কারণ হলো পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া।
ভয়ের কিছু নেই। কিছু সহজ অভ্যাস বদলালেই আপনি নিজের পেশি আগের মতোই সক্রিয় রাখতে পারবেন।
কেন পেশি দুর্বল হয়?
বয়স ৩০ পেরোলেই শরীরের পেশি আস্তে আস্তে কমতে থাকে, আর ৬০ পার হলে তা চোখে পড়ার মতো হয়ে ওঠে। চিকিৎসকেরা একে বলেন সারকোপেনিয়া।
এর কারণ হতে পারে:
- কম প্রোটিন খাওয়া
- শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়া
- ঘুমের সমস্যা
- ডায়াবেটিস বা দীর্ঘস্থায়ী অসুখ
- ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি
সমাধান কী?
দুইটি জিনিস—সঠিক খাবার এবং নিয়মিত চলাফেরা। এই দুই অভ্যাস একসঙ্গে রাখলেই আপনি পেশিকে সঠিকভাবে রক্ষা করতে পারবেন।
আপনার পেশি রক্ষায় সহায়ক ৮টি খাবার
১. দুধ
সাধারণ এক গ্লাস দুধেই আছে প্রয়োজনীয় প্রোটিন। দুধ খেতে না পারলে সয়াদুধ বা অন্য বিকল্প নিতে পারেন।
২. মুরগির মাংস
প্রোটিনে ভরপুর একটি খাবার, যা পেশি গঠনে খুবই সাহায্য করে।
৩. টোফু
উদ্ভিজ্জ উৎসের প্রোটিন হিসেবে টোফু খুব ভালো। যারা মাংস খান না, তাদের জন্য আদর্শ।
৪. ডাল বা বিনস
কালো বিন, মসুর, মটর ইত্যাদিতে থাকে অনেক প্রোটিন ও ফাইবার। অন্য প্রোটিনের সঙ্গে খেলে শরীর খুব ভালোভাবে গ্রহণ করে।
৫. বন্য স্যামন মাছ
স্যামন মাছ প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন D-এর ভালো উৎস। পেশি ও হাড় দুটোরই জন্য উপকারী।
৬. ডিম
সহজলভ্য ও সম্পূর্ণ প্রোটিন। কুসুমসহ খেলে পেশি ও ভিটামিন D-এর চাহিদা পূরণ হয়।
৭. মিষ্টি আলু
প্রোটিনে কম হলেও এতে বিটা-ক্যারোটিন নামক উপাদান আছে, যা পেশি মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
৮. লাল বেল পিপার
এই রঙিন সবজিতে আছে বিটা-ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা বয়সজনিত দুর্বলতা রোধে সহায়ক।
পানি খাওয়াটা ভুলে যাবেন না
বয়স বাড়লে তৃষ্ণা কম লাগে। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না খেলে পেশি দুর্বল হতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
শরীরচর্চা না থাকলে খাবার কাজে দেবে না
শুধু প্রোটিন খেলে হবে না — শরীরচর্চা করতেই হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা, হালকা ব্যায়াম বা কিছু স্ট্রেচিং আপনার পেশিকে সচল রাখবে।
বয়স্কদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
৮০-৯০ বছরের মানুষজন অনেক সময় খেতে চান না বা হজমের সমস্যা হয়। তখন স্মুদি বা প্রোটিন পাউডার ভালো বিকল্প হতে পারে।
যারা ওজন কমাতে চান, তাদের জন্যও পেশি ধরে রাখা জরুরি — কারণ ভুলভাবে ওজন কমালে শক্তি হারানো যায়।
মূল কথা
- প্রোটিন খেতে হবে
- ভিটামিন D-এর ঘাটতি রোধ করতে হবে
- রঙিন সবজি ও পানি প্রতিদিনের অভ্যাস করতে হবে
- এবং অবশ্যই শরীরচর্চা করতে হবে
এই চারটি নিয়ম মেনে চললেই বয়স যতই হোক, শরীর থাকবে শক্তিশালী — এবং জীবন থাকবে স্বাধীন।
মারিয়া