ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

অ্যাসাইলাম আবেদন করলেই বন্ধ পাসপোর্ট! বিপাকে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা

প্রকাশিত: ২০:৫১, ২৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:৫২, ২৭ জুলাই ২০২৫

অ্যাসাইলাম আবেদন করলেই বন্ধ পাসপোর্ট! বিপাকে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা

ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ, শিক্ষার্থী বা বিভিন্ন ভিসায় গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় বা অ্যাসাইলামের আবেদন করা বাংলাদেশিদের ই-পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করছে না দেশটির বাংলাদেশ মিশন। ফলে এসব প্রবাসী বাংলাদেশি স্বাস্থ্যসেবা, উচ্চশিক্ষা ও আইনি সুবিধার মতো মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এতে করে তাঁদের প্রবাসজীবন পড়ে গেছে চরম অনিশ্চয়তার মুখে।

 

 

 সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  শিক্ষার্থী জানান, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ থেকে তিনি অ্যাসাইলামের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। নতুন পাসপোর্টের জন্য সিডনি কনস্যুলেটে আবেদন করতে গেলে কর্তৃপক্ষ তা গ্রহণই করেনি। তিনি বলেন, “আমি অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ নই, কিন্তু এখন এমন এক অবস্থায় আছি—নিজ দেশের কাছেও আমার যেন কোনো পরিচয় নেই।”

 

 

শুধু তিনিই নন, শত শত বাংলাদেশি একই সমস্যায় পড়েছেন। সিডনির বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল ও ক্যানবেরার হাইকমিশন—দুই মিশনই একই নীতির ভিত্তিতে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন গ্রহণ করছে না।

পাসপোর্ট না থাকায় এসব বাংলাদেশি চিকিৎসা ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একজন অভিভাবক জানান, সন্তানের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার পাসপোর্টের কপি চাইছে, কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় তা গ্রহণ করছে না।

অস্ট্রেলিয়ার চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষার প্রয়োজন। কিন্তু বৈধ পাসপোর্ট না থাকায় অনেকেই এসব কোর্সে ভর্তি হতে পারছেন না, ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ভালো চাকরির সুযোগ হারাচ্ছেন।

এদিকে অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও বৈধ পাসপোর্ট অপরিহার্য। ভিসা পরিবর্তন বা নতুন ভিসার আবেদন করতেও পাসপোর্ট আবশ্যক। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় এসব সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন প্রবাসীরা।

 

 

এ অবস্থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনজীবী মোহাম্মদ নিজামউদ্দীন। তিনি বলেন, “অ্যাসাইলাম ভিসার আবেদন একটি বৈধ প্রক্রিয়া। এই আবেদন করার কারণে পাসপোর্ট না দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। বাংলাদেশ সরকার দেশের ভাবমূর্তির কথা বললেও, একজন নাগরিককে পাসপোর্ট না দেওয়াই আসলে দেশের ভাবমূর্তিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

 

ছামিয়া

×