
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রবিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেল ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৮ হাজার ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
তবে সভায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের আবাসনের জন্য প্রস্তাবিত ‘৩৬ জুলাই’ প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ডিপিপিতে যথাযথ খরচের মূল্যায়ন না হওয়ায় প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
রবিবার একনেক সভা শেষে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি একথা জানান।
প্রকল্প স্থগিত হওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, আমরা মনে করি এর যথার্থ মূল্যায়ন হওয়া উচিত। জুলাই যোদ্ধাদের সব প্রকল্প এক জায়গায় এনে সমন্বয় করা উচিত। তিনি বলেন, এটা এখন গ্রহণ করিনি, যথাযথভাবে খরচের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। এসব পরিবারের জন্য ভাতার ব্যবস্থা আছে, পঙ্গুদের ভাতা সবগুলোকে একসঙ্গে করে সমন্বিত করা উচিত। ভালো পরিকল্পনা দরকার। তবে এটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় দেখভাল করবে, সঙ্গে অন্যান্য মন্ত্রণালয় যুক্ত হবে।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে ১২ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৭টি, সংশোধিত প্রকল্প ৪টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধির দুটি প্রকল্প রয়েছে।
একনেক সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৬টি, সংশোধিত প্রকল্প ৪টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ২টি প্রকল্প রয়েছে। এগুলো হলো- কর্ণফুলী নদীর তী ঘেঁষে কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন ও কোস্ট গার্ডের জন্য লজিস্টিক সুবিধা গড়ে তোলা। এ ছাড়া গ্রামীণ স্যানিটেশন, বহদ্দারহাট খাল খনন, রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, মিরপুর সেনানিবাসে অফিসার্স মেস নির্মাণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প তালিকায় রয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর সম্প্রসারণ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কন্দাল ফসল গবেষণা এবং বিদ্যুৎ বিভাগের স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রকল্পও এদিন অনুমোদিত হয়।
এ ছাড়া সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা ইতিমধ্যে অনুমোদিত ১৮টি প্রকল্পের বিস্তারিত একনেক সদস্যদের অবহিত করেন। এর মধ্যে রয়েছে- গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন, হাতি সংরক্ষণ, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ঢাকা উত্তর ও রাজশাহী নগরীর অবকাঠামো উন্নয়নসহ আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
প্যানেল হু