ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

তিন হাজার সোলার সংযোগ ছয় মাসের মধ্যে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:০০, ২৭ জুলাই ২০২৫

তিন হাজার সোলার সংযোগ ছয় মাসের মধ্যে

সরকারি সব ভবনে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার

সরকারি সব ভবনে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ হাতে নেওয়া হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারি অবকাঠামোতে প্রায় ৩ হাজার সোলার সংযোগ স্থাপন করা হবে। সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি।

তবে কেবল সব সরকারি ভবনে নয়, সারাদেশের ৪৪৮ সরকারি-বেসরকারি ভবনে পরীক্ষামূলকভাবে এই কর্মসূচি নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি। পাশাপাশি কর্মসূচিতে রক্ষণাবেক্ষণ নির্দেশিকা প্রদান করা, পলিসি গাইড লাইন করা, সোলার প্যানেলে কর মওকুফ করা, সোলার প্যানেল ক্রয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রিন এনার্জি ফান্ডের ব্যবস্থা করা, বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার ধানম-িতে সিপিডি কার্যালয়ে জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির নক্সা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো বিষয়ে প্রস্তাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব প্রস্তাব করা হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি, বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ, ¯্রডোর পরিচালক মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য মো. নাসির উদ্দিন, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-¯্রডোর পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের প্রধান প্রকৌশলী সরদার মোহাম্মদ জাফরুল হাসান প্রমুখ।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ২৩ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সরকারের জ্বালানি নীতির আওতায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি নীতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উত্তরণ করা হবে। তিনি বলেন, সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা সতর্কভাবে স্বাগত জানাচ্ছি। সতর্কতার কারণ হিসেবে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এর আগে রাজধানীর বাসা বাড়িতে রুফটপ কর্মসূচির অধীনে, বাসা বাড়ির ছাদে সোলার লাগানোর একটি বাধ্যবাধকতা এখনো রয়েছে।

বাসা বাড়িতে সোলার লাগানোর এক ধরনের লোক দেখানোর কাজ হয়েছে। এর ফলে সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের মনে স্থায়ী নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে এই কর্মসূচির সুবিধাভোগী হয়েছেন অনেকে। সেই জায়গায় যেন এই কর্মসূচিটি না যায় সে জন্য শুরু থেকেই আমাদের সতর্ক থাকা দরকার।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের নেওয়া ভুল নীতির কারণে জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। সংকটের ধারাবাহিকতায় এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ যথেষ্ট কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকার তার সময়কালের ভেতরে এই কার্যক্রমটির একটি সমাপনী দেখতে চান। এজন্য তাড়াহুড়ো করে একটি সমাপনী টানতে চাইছেন। এটি ২০২৫ এর ডিসেম্বরে সমাপনীর বিষয় নয়। এটি দীর্ঘব্যাপী। এত বড় কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আবার দেখা দেবে। সরকারের ক্রয় কর্মসূচিতে ত্রুটি থাকতে পারে।
বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, এটি অনেক বড় সাহসী ও উচ্চবিলাসী উদ্যোগ। এটি আগের মতো যেন নষ্ট না হয়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং গবেষণা উন্নয়ন পরিদপ্তরের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রেডিয়েশনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। যেসব সমস্যা তুলে ধরা হয়েছে তার সবগুলোই আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।

আগামী দিনে এ বিষয়ে আরও কয়েকটি পরিপত্র জারি হবে। তখন বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে। তিনি বলেন, সরকারি ছাদে সোলার প্যানেল বসলে তার রক্ষণাবেক্ষণ ওই প্রতিষ্ঠানই করবে, এমন একটি বিষয় আলোচনায় রয়েছে। ছাদে সোলার করলে আমাদের জমি নষ্ট হবে না। আবার আমরা অনেক কম টাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব।
¯্র্েরডার পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, বাসা বাড়িতে সোলার বসানোর যে কার্যক্রম নেওয়া হয়েছিল সেটা কোনো কাজে দেয়নি। কেননা সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। এই কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলক রাখার প্রয়োজন আছে। চলতি বছরের মধ্যে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অর্জন অনেক কঠিন হবে।
সরদার মোহাম্মদ জাফরুল হাসান বলেন, এই শক্তিটা যখন আমাদের গ্রিডে আসবে তখন সেটা রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের চ্যালেঞ্জের। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করায় আমরা নানা উদ্যোগ নেব। আশা করছি সোলারের মাধ্যমে যে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে সেটাও গ্রিডে অন্তর্ভুক্ত করতে পারব। বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই অর্থায়ন বিভাগের সাবেক পরিচালক খোন্দকার মোর্শেদ মিল্লাত বলেন, রুফটপ সোলারের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সাহায্য করছে।

প্যানেল হু

×