ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

নালিতাবাড়ীর আশ্রয়ণ ঘরে বসতি নেই, প্রকৃত গৃহহীনরা বঞ্চিত

সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ০০:৫৩, ২৮ জুলাই ২০২৫

নালিতাবাড়ীর আশ্রয়ণ ঘরে বসতি নেই, প্রকৃত গৃহহীনরা বঞ্চিত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ভোগাই নদীর তীরে মরিচপুরান ইউনিয়নের ভোগাইপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত ৭০টি ঘরের মধ্যে প্রায় ৪০টিতেই ঝুলছে তালা। উপকারভোগীদের অনেকে ঘর ছেড়ে চলে গেছেন কেউ রাজধানীসহ অন্যত্র, কেউ আবার ফিরে গেছেন আগের বসতভিটায়। ফলে এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।

ঈদ বা উৎসব ছাড়া এসব ঘরের দরজা খোলা খুব কমই দেখা যায়। কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক উপকারভোগী সেখানে টিকতে পারেননি। কেউ কেউ নামমাত্র দখল রেখে বিকল্প স্থানে চলে গেছেন। এমনকি কিছু ঘর বিক্রির অভিযোগও উঠেছে।

সরকারি তথ্যমতে, আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ২০২৩ সালে শেরপুরের পাঁচটি উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় নালিতাবাড়ীতেও শত শত পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ভোগাইপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মিত ৭০টি ঘরের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই এখন ফাঁকা পড়ে আছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, খাস জমিতে নির্মিত এসব ঘরে বিদ্যুৎ, পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা থাকলেও জীবিকার ব্যবস্থা না থাকায় বসবাস অনিরবচ্ছিন্ন হয়নি। ফলে অনেক উপকারভোগী কাজের খোঁজে চলে গেছেন অন্যত্র।

স্থানীয় ইয়াসমিন আক্তার জানান, অনেক দরিদ্র পরিবার ঘর পাওয়ার আশায় তালাবদ্ধ ঘরগুলোর বরাদ্দ বাতিল করে তাদের নামে বরাদ্দ চাইছেন। প্রকৃত গৃহহীন অনেকেই এখনো ঘর থেকে বঞ্চিত।

চাম্পা বেগম বলেন, “সরকার ঘর দিছে ঠিকই, কিন্তু কাজের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষ বাইরে থাকে, মাঝেমধ্যে আসে, আবার চলে যায়।”

আমিনুল ইসলাম জানান, “অনেক ঘর এমন মানুষের নামে বরাদ্দ হয়েছে যাদের নিজেরই পাকা ঘর আছে। তাই তালাবদ্ধই থাকে।”

স্থানীয়দের দাবি, যারা প্রকৃতপক্ষে ঘরে বসবাস করছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত গৃহহীনদের সুযোগ দিতে হবে।

এ বিষয়ে মরিচপুরান ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, “কয়টি ঘর তালাবদ্ধ, তা খোঁজ নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন, “ঘর পেয়ে ব্যবহার না করাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

নুসরাত

×