ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সারাক্ষণ ফোনে চোখ? স্ক্রিনটাইম কমানোর ৫টি সহজ উপায়

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২৮ জুলাই ২০২৫

সারাক্ষণ ফোনে চোখ? স্ক্রিনটাইম কমানোর ৫টি সহজ উপায়

ছ‌বি: প্রতীকী

সারাক্ষণ মোবাইল স্ক্রিনে চোখ আটকে থাকে? ঘুমানোর আগের শেষ কাজ আর ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজটা যদি হয় ফোন চেক করা, তাহলে সময় এসেছে একটু সচেতন হওয়ার। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার শুধু সময় নষ্টই নয়, ঘুমের ব্যাঘাত, মনঃসংযোগে সমস্যা এবং মানসিক চাপের কারণও হতে পারে। নিচে ৫টি কার্যকর উপায় দেওয়া হলো, যেগুলো অনুসরণ করলে সহজেই স্ক্রিনটাইম কমানো সম্ভব।

১. ফ্রিতে পাওয়া স্ক্রিনটাইম কন্ট্রোল ব্যবহার করুন
ফোন ব্যবহারের সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে কোনো অ্যাপ কিনে ফেলার আগে আপনার ডিভাইসেই থাকা ফ্রি ফিচারগুলো ব্যবহার করে দেখুন।
অ্যাপলের ডিভাইসে ‘Screen Time’ এবং অ্যান্ড্রয়েডে ‘Digital Wellbeing’ নামে ফিচার রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে নির্দিষ্ট অ্যাপের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যায় বা নির্দিষ্ট সময় পর অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া যায়। এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলে অ্যাপ আনলক করতে পাসকোড লাগে, যা ব্যবহারকারীকে ভাবতে বাধ্য করে।
এছাড়া আপনি দিনে কতবার ফোন তুলেছেন বা কত সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থেকেছেন, তাও এই ফিচারগুলো জানিয়ে দেবে – যা নিজেকে একটু সচেতন করার জন্য যথেষ্ট।
অভিভাবকরা চাইলে Family Sharing (Apple) বা Family Link (Android) ব্যবহার করে সন্তানদের ফোন ব্যবহারে নজরদারি রাখতে পারেন। চাইলে Qustodio বা OurPact-এর মতো পেইড অ্যাপ ব্যবহার করেও একাধিক ডিভাইস একসাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

২. স্ক্রিন গ্রেস্কেল করুন
স্মার্টফোনের রঙিন ও আকর্ষণীয় ইন্টারফেস আমাদের চোখ আটকে রাখে। তাই ফোনের স্ক্রিন সাদা-কালো (গ্রেস্কেল) করে ফেলুন। রঙের উজ্জ্বলতা না থাকলে, বহু ব্যবহারকারী দেখেছেন যে ঘন্টার পর ঘন্টা স্ক্রল করার ইচ্ছাটা অনেকটাই কমে যায়।

৩. ফোকাস মোড চালু করুন
অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোনে এখন “Focus Mode” নামে ফিচার রয়েছে, যা বিভিন্ন সময় অনুযায়ী নির্দিষ্ট অ্যাপের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে সাহায্য করে।
যেমন, অফিস টাইমে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ ব্লক করে রাখা যায়, আবার রাতে শোওয়ার সময় সব কিছু বন্ধ রেখে শুধু অ্যালার্ম চালু রাখা সম্ভব।
ফোন বুঝে নেয় কখন ফোকাস মোড চালু করতে হবে – সময় কিংবা অবস্থান বুঝে আপনাকে সেরা সময়টায় বিরক্তি থেকে বাঁচাতে পারে। চাইলে জরুরি যোগাযোগের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নাম্বার রাখতেও পারবেন।

৪. সময় খাদক অ্যাপগুলো মুছে ফেলুন
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলো আমাদের সবচেয়ে বেশি সময় খেয়ে ফেলে। এই অ্যাপগুলো ফোন থেকে মুছে ফেললে, বারবার লগ ইন করতে হয় বলে ব্যবহার অনেকটা কমে যায়। ফলে সময় বাঁচে এবং ফোনে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরাও কমে।

৫. 'ডাম্ব' ফোন ব্যবহার করুন
এক সময়ের জনপ্রিয় বাটন ফোনগুলো আবার ফিরে এসেছে নতুন রূপে। এসব ফোনে নেই ঝলমলে অ্যাপ, বড় স্ক্রিন বা অহেতুক নোটিফিকেশন। ফলে স্ক্রিনটাইম স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়।
আরেকটি বাড়তি সুবিধা – এসব ফোনের ব্যাটারি চলে একাধিক দিন।
তবে বর্তমান যুগে ফোন দিয়ে ব্যাংকিং, মানচিত্র, মেইল – সবকিছুই করা হয় বলে পুরোপুরি ডাম্বফোনে চলে যাওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। চাইলে সপ্তাহান্তে বা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

রাতের বেলা ঘুমানোর সময় বা সকালে উঠেই ফোন চেক করার অভ্যাস দূর করতে হলে ফোনকে ঘর থেকে বের করে দিন। এর বদলে একটি সাধারণ অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করুন। ফোন চোখের সামনে না থাকলে, মধ্যরাতে স্ক্রল করার বা সকালে বিছানা থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢোকার প্রবণতা অনেকটাই কমে যাবে।

স্মার্টফোনের আসক্তি থেকে নিজেকে একটু সময় দিন। ছোট ছোট অভ্যাস বদলেই স্ক্রিনটাইম নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব – শরীর, মন আর সময় – সবকিছুর জন্যই উপকারী।

 

এম.কে.

আরো পড়ুন  

×