
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় রানীশিমুল ইউনিয়নের হাসধরা গ্রামে এক নারীর গোসলের গোপন ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই বাদী হয়ে শুক্রবার (২৫জুলাই) রাতে শ্রীবরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
লিখিত অভিযোগে বাদী মো: রুমান মিয়া (৩০), পিতা- ঝালু মিয়া, গ্রাম হাসধরা আকন্দবাড়ী, তিনি উল্লেখ করেন, একই গ্রামের প্রতিবেশী মোঃ সাইম মিয়া (২০) ও মোঃ আরিফ মিয়া (২০) কিছুদিন আগে তার ছোট বোনের গোসলের গোপন ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন। পরে তারা ভিডিও দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা হয় এবং অভিযুক্তরা ভুল স্বীকার করে ভিডিও না ছড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সম্প্রতি আবারও তারা টাকা দাবি করে এবং অনৈতিক প্রস্তাব না মানায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়। এতে ভুক্তভোগী পরিবার চরম মানসিক বিপর্যয়ে পড়েছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ‘Neon Islam Arif’ নামের একটি ফেসবুক আইডি ও আরও কয়েকটি আইডির মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেন। এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে বাদীকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। তারা দাবি করে, আরও অশ্লীল ছবি ও ভিডিও রয়েছে, যা ইমু ও টিকটকেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগীর বাবা ঝালু মিয়া বলেন, আমার মেয়ের সাথে যা হয়েছে, তা ভাষায় বলার মতো না। আমরা গরিব মানুষ, কিন্তু ইজ্জত আমাদেরও আছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, এসব ছেলেদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যাতে আরো কারো মেয়ের সাথে এমন জখন্য কাজ করতে কেউ করতে সাহস না পায়।
বাদী রুমান মিয়া বলেন, এরা এলাকার দাঙ্গাবাজ, সুযোগ পেলেই মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করে। আমরা থানা ও প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান, ঘটনার সত্যতা এলাকায় সবাই জানে। মেয়েটি তাদের গোসল খানায় ভিতরে গোসল করছিল, সেটি গোপনে ভিডিও করে ছড়ানো মানে মানবতা ধ্বংস করা। পুলিশ যেন দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল্লাহ বলেন, যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, এটি শুধু অপরাধ নয় এটা নারীর প্রতি চরম সহিংসতা। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে মেয়েটি। এলাকাবাসী প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার জাহিদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফরোজা