
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের (বিএটিবিসি)
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের (বিএটিবিসি) মুনাফায় ধস নেমেছে। আগের বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল থেকে জুন) কোম্পানিটির মুনাফা কমে পাঁচ ভাগের এক ভাগে নেমেছে। ঢাকার কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) জমা দেওয়া কোম্পানিটির আর্থিক বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ৯ টাকা ৪৮ পয়সা। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ৭ টাকা ৬৯ পয়সা।
আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১৭ টাকা ১৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুনাফায় ধস নামায় অর্ধবার্ষিক হিসাবেও কোম্পানিটির মুনাফা বড় অঙ্কে কমেছে। বিশ্লেষকরা জানান, ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এক প্রান্তিকে এত কম মুনাফা কোম্পানিটি আগে কখনো করেনি।
জানা যায়, ডানহিল, লাকি স্ট্রাইক, কেন্ট, পলমল, কুল, বেনসন এবং রথম্যান্স তামাকজাত পণ্যের উৎপাদনকারী এ প্রতিষ্ঠানটি তামাকজাত পণ্য বিক্রির দিকে থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ প্রতিষ্ঠান। বিশ্বজুড়ে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করা কোম্পানিটি বাংলাদেশেও দীর্ঘদিন ধরে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে। কিন্তু গত ১৪ মে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-এর পক্ষ থেকে অবিলম্বে মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকা থেকে বিএটিবিসির তামাক কারখানা অপসারণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১ জুলাই থেকে ঢাকার মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকায় অবস্থিত ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্রি কমে যাওয়া এবং ঢাকার কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মুনাফায় এমন নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৫৪ কোটি। এর মধ্যে ৭২ দশমিক ৯১ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ এবং বিদেশিদের কাছে ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার আছে।
গত ১৪ মে সরকারের কাছে বিএটিবিসির মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকার কারখানা অপসারণের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দেয় পবা। এতে উল্লেখ করে, ১৯৬৫ সালে যখন ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ-এর তামাক কারখানা স্থাপন করা হয়, তখন এটি একটি গ্রামীণ জনপদ ছিল। মূল শহরের অংশ ছিল না।
জানা যায়, দেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু এবং ১৫ লক্ষাধিক মানুষ ফুসফুস ক্যানসার, মুখের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অ্যাজমা ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ তামাক।
প্যানেল হু