
বাগেরহাটে দিনে দুপুরে চাচা-ভাইপোকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে মারধর ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে শহরের জেলা কারাগার সড়ক থেকে জাহাঙ্গীর কাজী (৪২) ও ইয়াসিন বিশ্বাস (৩৫) নামের চাচা-ভাইপো ওই দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে ঘটনা ঘটে। পরে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে অর্ধলক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়ের পর এদিন সন্ধ্যার দিকে অপহরণকারীরা তাদের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী মোড়ে ছেড়ে চলে যায়।
অপহরণের শিকার দুজনের বাড়ি খুলনা জেলায় কয়রা উপজেলায় তেতুলতলা গ্রামে। তারা মোংলায় বাস করে সুন্দরবনে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সামনেই জেলখানা, তাকালে দেখা যায়। পাশে মনে হয় দেড়শ গজ হবে না পুলিশ সুপারের কার্যালয়। এখান থেকে মানুষ উঠিয়ে নিয়ে যায়। মুহূর্তেই এসে ছোঁ দিয়ে নিয়ে গেল। মাইরও দিয়েছে। ’
অপহৃত জাহাঙ্গীর ও ইয়াসিনের সঙ্গে একসাথে মোংলা থেকে বাগেরহাটে এসেছিলেন রুমি শেখ। তিনি বলেন, ‘কোর্টে আমাদের কাজ ছিল। আমার এক আত্মীয় আছে জেলহাজতে, জাহাঙ্গীর ভাইয়েরও এক ছোট ভাই আছে। কোর্টের কাজ সেরে আমরা হেঁটে সেখানে (কারাগারে) যাচ্ছিলাম। ’
তিনি বলেন, ‘ফোনে কথা বলতে বলতে আমি একটু পিছনে পড়ি, হঠাৎ করে দেখি কয়টা বাইক (মোটরসাইকেল) নিয়ে এসে জাহাঙ্গীর ভাই আর ইয়াসিনকে পিটিয়ে রাস্তায় শুয়ায়ে ফেলছে। তারা ৫-৬ জনে মিলে তাদের বাইকে তুলে জোরে চালিয়ে দশানীর দিকে চলে গেল। তারপর ফোন দিচ্ছি, কিন্তু পাচ্ছি না। এর অনেক পরে ফোন রিসিভ করছে, তখন টাকা দাবি করছে।
রুমি শেখ ও জাহাঙ্গীরের পরিবার বলছে, তাদের জিম্মি করার পর জাহাঙ্গীরের মোবাইল থেকেই তারা ফোন করে। সেই নম্বর থেকে কথা বলেছে টাকা চাইছে। মারছে আর ফোন দিয়ে টাকা চাইছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা আদায়ের পর সন্ধ্যার দিকে ওই দুই জনকে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী এলাকায় ফেলে যায় জিম্মিকারীরা।
অপহৃত অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে জাহাঙ্গীর কাজী বলেন, ‘আমাকে খুব মারছে। রাস্তায় লোকজন ছিল। কিন্তু কেউ আগায়নি। আমার মনে হয় হাত-পা ভেঙ্গে গেছে।’
কারা তাকে তুলে নেয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকে তাদের কাউকে চিনি না। এখান থেকে তুলে নিয়ে গেছে, চুলকাঠীর দিকে নিয়ে হাইওয়েতে উঠেছে। তারপর আরও চালিয়ে এক জায়গায় নিয়েছে। চারটে মোটরসাইকেল ছিল। আরও সেখানে লোক ছিল। আমার কাছে ৫ হাজার টাকা ছিল, নিয়েছে। আর ফোন করে আরও ৫৫ হাজার টাকা নিয়েছে বাড়ি থেকে। আমারে মারছে আর বাড়ি টাকা চাইছে।’
বাগেরহাট সদর থানার ওসি মাহমুদ-উল-হাসান বলেন, ‘আমরা এমন কোন অভিযোগ পাইনি। তবে মুখে মুখে শুনেছি। এ নিয়ে আমরা কাজ করতেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Mily