
নদী ভ্রমণ এক সময় ছিল বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নৌকায় করে নদীর বুক চিরে প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতেন মানুষ। কিন্তু বর্তমানে সেই শান্তিপূর্ণ ভ্রমণ পরিবেশ দিনদিন যেন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিছু কিশোরের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে।
বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে ছুটির দিনে দেখা যায়, একদল কিশোর দলবেঁধে নৌকায় ওঠে। তারা সঙ্গে নিয়ে আসে উচ্চশব্দের লাউডস্পিকার, যেখান থেকে বাজতে থাকে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ গান। গান চলাকালীন সময়ে তারা শুরু করে অশালীন অঙ্গভঙ্গি ও নাচানাচি। যা ভ্রমণ পিপাসুদের রীতিমতো বিব্রত করে ফেলে।
কেউ নিষেধ করছে গেলে তাদের আচরণ হয়ে উঠে ভয়ানক রকমের উগ্র। প্রতিবাদকারীর দিকে তেড়ে আসে গায়ে হাত দিতে, গালিগালাজ তো রয়েছেই, এমনকি মারধরের হুমকিও দেয় তারা। এতে সাধারণ মানুষ মান-সন্মান ও ভয়ে মুখ বন্ধ করে থাকে, ফলে তাদের উচ্ছৃঙ্খলতা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
ভুক্তভোগী চাকুরিজীবী সাদিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার আমি পরিবার নিয়ে বাসোলিয়া ঘুরতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কই থেকে যেন একটি নৌকা এসে কিছু কিশোর এমন অশ্লীল গান আর অঙ্গভঙ্গি করছিল, যেটা সন্তানদের সামনে খুবই বিব্রতকর। আমাদের পাশে নৌকা বারবার চক্কর দিচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়ে আমরা দ্রুত ফিরে আসি।
স্থানীয় রফিক, আনোয়ার, শাজাহান প্রায় একই সুরে কথা বলেন, নদীতে এখন এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু দিন আগেও যেখানে সবাই মিলে নদীতে শান্তিপূর্ণ সময় কাটানো যেত, সেখানে এখন অনেকে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, এই কিশোরদের আচরণ শুধুই উচ্ছৃঙ্খলা নয়, এটি সমাজে একটি গভীর মূল্যবোধের সংকটের ইঙ্গিত দেয়। অভিভাবকদের পাশাপাশি সকলকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম না নিলে এই পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
Mily