
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
যশোরের সিঙ্গিয়া রেলস্টেশন থেকে সব ফ্যান খুলে নিয়ে গেছে রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। রেলওয়ের দুই বিভাগের ঠেলাঠেলিতে এই ঘটনা ঘটেছে। শনিবার এই ঘটনার পর থেকে দু’দিন ধরে যাত্রী সাধারণসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। এই ঘটনার পর স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখিত আকারে জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মাসেতু রেলপ্রকল্প চালু হওয়ার পর খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি সিঙ্গিয়া-পদ্মবিলা জংশন দিয়ে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করছে। ফলে সিঙ্গিয়া জংশনের গুরুত্ব বেড়েছে অনেক। পদ্মাসেতু লিঙ্ক প্রকল্পের আওতায় সিঙ্গিয়া স্টেশনে নতুন ভবনও নির্মাণ করা হয়েছে। গত শনিবার এই ভবন থেকে সব ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম খুলে নিয়ে গেছে রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ। রেলওয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন এই ফ্যানসহ সরঞ্জাম খুলে নিয়ে গেছেন। খুলে নেওয়া সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে, দুটি যাত্রী বিশ্রামাগারের ৮টি ফ্যান, টিকিট কাউন্টারের ৩টি ফ্যান এবং স্টেশন মাস্টার ও সহকারী স্টেশন মাস্টারের কক্ষের ৪টি ফ্যান। এছাড়া ৫টি এডজাস্ট ফ্যানও খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং স্টেশন মাস্টারের কক্ষের এসির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, রেলওয়ের মধ্যেই একাধিক বিভাগ রয়েছে। মূলত রেলওয়ের বিদ্যুৎ ও পরিবহণ বিভাগের ঠেলাঠেলিতে এই ঘটনা ঘটেছে। রেলওয়ের বিদ্যুতের সরঞ্জামাদি স্থাপন, মেরামত রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে বিদ্যুৎ বিভাগ। আবার এইসব কিছুর নিরাপত্তার দায়িত্ব রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর। কিন্তু সিঙ্গিয়া স্টেশনে এখনও জিআরপি ফাঁড়ি বা নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অন্যদিকে, স্টেশন মাস্টার রেলওয়ের পরিবহণ বিভাগের অধীনে। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে ফ্যানসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলো বুঝে নেওয়ার জন্য স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসানকে চাপ দেওয়া হয়। তার আওতাবহির্ভূত বিধায় তিনি এই সরঞ্জাম বুঝে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেন স্টেশনের সব ফ্যান খুলে নিয়ে যান।
এদিকে, এ ঘটনার পর প্রচন্ড গরমে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী সাধারণরা। যাত্রী বিশ্রামাগারের মধ্যে গরমে তাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যাচ্ছে। একইসাথে স্টেশন মাস্টার, সহকারী স্টেশন মাস্টার এবং টিকিট কাউন্টারেও দায়িত্বরতদের দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সিঙ্গিয়া রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান পাকশী বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্টেশন মাস্টার কেএম রিয়াদ হাসান জানান, স্টেশন ভবনের সবগুলো ফ্যান খুলে নেওয়া হয়েছে। এ জন্য তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন সিঙ্গিয়া স্টেশন মাস্টারের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) জাকির হোসেনের ফোনে ফোন দিলে তার স্ত্রী ফোন রিসিভ করে জানান, তিনি (জাকির হোসেন) অসুস্থ। কথা বলতে পারবেন না।
ফারুক