
ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ সময় ধরে আঁটসাঁট বেল্ট পরা শুধু অস্বস্তিকরই নয়, পেটের ওপর যে অতিরিক্ত চাপ পড়ে তা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য সমস্যার কারণও হতে পারে।
সি কে বিড়লা হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের প্রধান পরামর্শক ডা. ত্রিপ্তি রাহেজা বলেন, এই চাপ পুরুষদের প্রজনন সক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, “প্রথমত, এতে অণ্ডকোষের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা ক্ষতিকর; কারণ স্বাভাবিক স্পার্ম উৎপাদনের জন্য অণ্ডকোষ শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় ঠান্ডা থাকা জরুরি।” তিনি আরও যোগ করেন, অণ্ডকোষের আশেপাশের অংশে অতিরিক্ত তাপমাত্রা স্পার্মের গুণমান এবং গতি—উভয়কেই খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
তিনি বলেন, “দ্বিতীয়ত, আঁটসাঁট বেল্ট পেলভিক অঞ্চলে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে অণ্ডকোষ ও অন্যান্য প্রজনন অঙ্গগুলোর কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে এবং স্পার্ম উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে।”
নিম্ন পেট ও যৌনাঙ্গের ওপর দীর্ঘক্ষণ চাপ পড়লে সেখানে জ্বালাভাব, কিংবা স্ক্রোটামের শিরা বড় হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে, যাকে ‘ভ্যারিকোসিল’ বলা হয় — এটি পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের একটি পরিচিত কারণ।
ডা. রাহেজা আরও বলেন, “আঁটসাঁট বেল্ট পরার কারণে ধীরে ধীরে হজমজনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে।”
চেন্নাইয়ের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজির পরামর্শক অ্যান্ড্রোলজিস্ট ও ইউরোলজিস্ট ডা. সঞ্জয় প্রকাশ জে বলেন, পুরুষদের জন্য আঁটসাঁট বেল্ট দীর্ঘ সময় বা ঘনঘন পরলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, “এটি পেটের চারপাশে এক ধরনের স্থায়ী চাপ তৈরি করে, যা রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে পেলভিক অঞ্চলের অঙ্গগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। এই অতিরিক্ত চাপ অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো হজমজনিত সমস্যা তৈরি করতে পারে, যা বেশ অস্বস্তিকর।”
এই ঝুঁকি কমাতে হলে ঢিলেঢালা, আরামদায়ক পোশাক পরা উচিত, যা শরীরে বাতাস চলাচল নিশ্চিত করে এবং অতিরিক্ত গরম হওয়া থেকে রক্ষা করে। ডা. রাহেজা বলেন, “একটানা বসে থাকলে মাঝেমধ্যে বিরতি নেওয়া এবং কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করাও পেলভিক অঞ্চলে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।”
ডা. সঞ্জয় আরও পরামর্শ দেন, এমন বেল্ট পরা উচিত যা খুব টাইট নয় এবং শরীরের জন্য স্বস্তিদায়ক।
উপরন্তু, সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা—এসব স্বাস্থ্যকর অভ্যাস পুরুষদের প্রজননক্ষমতা ও সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এএইচএ