ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৭ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

খালি পেটে নাকি খাওয়ার পরে: কখন হাঁটলে ওজন বেশি কমবে

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ৬ মে ২০২৫

খালি পেটে নাকি খাওয়ার পরে: কখন হাঁটলে ওজন বেশি কমবে

ছবি: সংগৃহীত

হাঁটা ওজন কমায় কি না, তা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু হাঁটার উপকারিতা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই। ক্যালোরি বার্ন থেকে শুরু করে পায়ের পেশি টোন করা, হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা, মন ভালো করা এবং হজম শক্তি বাড়ানো পর্যন্ত হাঁটা যে কোনো ফিটনেস যাত্রার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সঠিকভাবে হাঁটলে এটি শরীরের ফ্যাটও কমাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটার সঠিক সময় নির্বাচন করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নিই কোন সময়ে হাঁটা সবচেয়ে বেশি উপকারে আসে:

খালি পেটে সকালবেলা হাঁটা

রাতভর না খাওয়ার কারণে সকালে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কম থাকে এবং সহজলভ্য কার্বোহাইড্রেট জাতীয় শক্তি ফুরিয়ে আসে। তাই, খালি পেটে হাঁটার সময় শরীর শক্তির জন্য চর্বির ভাণ্ডার ব্যবহার শুরু করে। গবেষণা বলছে, সকালে খালি পেটে হাঁটলে চর্বি পোড়ার হার খাবার খাওয়ার পর হাঁটার চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি হতে পারে। এটি শরীরের মেটাবলিক ফ্লেক্সিবিলিটি বা কার্ব চর্বির মধ্যে শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা বাড়ায়, যা সারাদিন ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

খাওয়ার পর হাঁটা

খাবার খাওয়ার পর হাঁটলে শরীরে অন্য ধরনের উপকারিতা মেলে। খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এবং ইনসুলিন নিঃসৃত হয়, যা শক্তি সঞ্চয়ে সাহায্য করে। হাঁটা সেই শর্করাকে পেশিতে শক্তিরূপে ব্যবহারে সহায়তা করে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে না। মাত্র ১৫ মিনিটের হাঁটায় রক্তে গ্লুকোজ ২২% কমে যায়, যা হৃদযন্ত্র বিপাকের জন্য ভালো। রাতের খাবারের পর হাঁটা আরও বেশি উপকারী, কারণ রাতে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমে যায়।

হজমে প্রভাব

হাঁটার সময় অনুযায়ী হজমে ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব পড়ে। খাওয়ার আগে হাঁটা হজম রস নিঃসরণ বাড়ায়, যা শরীরকে খাবার হজমে প্রস্তুত করে। আবার খাওয়ার পরে হাঁটা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, গ্যাস্ট্রিক বা ফোলাভাব কমায়। তবে খাওয়ার পরে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে হাঁটলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

ক্ষুধা হরমোনে প্রভাব

হাঁটার সময় ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোনেও প্রভাব পড়ে। সকালে খালি পেটে হাঁটলে ঘ্রেলিন (ক্ষুধা বাড়ায় এমন হরমোন) এর মাত্রা কমে যায়, ফলে সকালের খাবারে অতিরিক্ত খাওয়া হয় না। অন্যদিকে, খাওয়ার পর হাঁটলে তৃপ্তির অনুভূতি বাড়ে, ফলে অতিরিক্ত স্ন্যাক্স বা খাওয়ার প্রবণতা কমে। উভয় পরিস্থিতিতেই হাঁটা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমাতে সহায়ক।

ঘুম হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যে প্রভাব

সকালের হাঁটায় সূর্যালোক শরীরের জৈবিক ঘড়ি (biological clock) ঠিক রাখে, যা ঘুমের গুণমান বাড়ায়। ভালো ঘুম ওজন কমাতে সহায়ক। খালি পেটে সকালে হাঁটা রক্তনালির কার্যকারিতা বাড়ায় রক্তচাপ কমায়। রাতের খাবারের পর হালকা হাঁটা রক্তে শর্করা হজম সমস্যাও কমায়, ফলে ঘুম ভালো হয়। তবে ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময় বেশি ব্যায়াম করা ঠিক নয়।

আপনার হাঁটার সময় যদি ঠিকভাবে বাছাই করা হয়, তাহলে তা শুধু ক্যালোরি ঝরাতেই নয়, বরং হৃদযন্ত্র, হজম, ঘুম ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণেও অভাবনীয়ভাবে সাহায্য করতে পারে।

 

সূত্র: https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/health-fitness/walking-to-burn-calories-heres-why-the-timing-makes-all-the-difference/photostory/120927037.cms?picid=120927214

রবিউল

×