নান্দাইলের ‘পিঠার রানী’
আমাদের গ্রামীণ সমাজে ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটাসহ নানা ধরনের পিঠার প্রচলন রয়েছে। বিয়ে অথবা নানা পার্বণ উপলক্ষে অতিথি আপ্যায়নে গ্রামের বধূরা এসব পিঠা তৈরি ও পরিবেশন করে থাকেন। বিশেষ করে বাড়িতে নতুন জামাইয়ের আগমনে পিঠা ছাড়া আপ্যায়ন কল্পনা করা যায় না। তবে গতানুগতিক পিঠার বাইরে ব্যতিক্রমী এক পিঠা নিয়ে এসেছেন নান্দাইলের শিপলু আক্তার খানম (৩২) নামে এক নারী। তিনি মাছের পিঠা তৈরি করে তা অনলাইনে বাজারজাত করেন। এখন সবাই তাকে চেনেন ‘পিঠার রানী’ নামে।
শিপলু আক্তার পৌরসভার ভূঁইয়াপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। তার স্বামী কামরুজ্জামান খান একটি ইলেকট্রনিক্স কোম্পানিতে চাকরি করেন। শিপলু একটি বেসরকারী সংস্থায় প্রায় দেড় যুগ চাকরি করেছেন। এরপর করোনাকালে তাকে চাকরি হারাতে হয়। চাকরি হারিয়ে বিপাকে পড়লেও ভেঙে পড়েননি। ভূঁইয়াপাড়া মহল্লায় তাদের মাছ চাষের পুকুর রয়েছে। একদিন মহল্লায় মৎস্যচাষীদের নিয়ে মাছ চাষের বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয় উপজেলা মৎস্য বিভাগ। শিপলুও ওই প্রশিক্ষণে অংশ নেয়।
প্রশিক্ষণ শেষে শিপলু মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া সকলকে মাছের পিঠা খাওয়ালেন। তার তৈরি মাছের পিঠা খেয়ে সকলেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যাবার সময় তৎকালীন মৎস্য কর্মকর্তা আরিফ হোসেন মাছের পিঠা নিয়ে শিপলু আক্তারকে বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনা করার পরামর্শ দেন। এরপরই ‘নান্দাইলের নারী উদ্যেক্তার মাছের পিঠা’ নামে ফেসবুক আইডি খুলে পিঠা বিক্রি শুরু করেন। নানা ধরনের মাছ দিয়ে পিঠা তৈরি করে নিজের ফেসবুক আইডিতে আপলোড করে বেশ ভাল সাড়া পান। এখন সবাই এখন তাকে চেনেন ‘পিঠার রানী’ নামে। আবহমান বাংলার গতানুগতিক পিঠার বাইরে ব্যতিক্রমী পিঠা তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে দেশের সর্বত্র সরবরাহ করে যাচ্ছেন তিনি।
শিপলু জানান, তার নিজস্ব পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরে তিনি মাছ চাষ করেন। পিঠা তৈরির প্রধান উপকরণ তাজা মাছ। সেটি তিনি তার নিজের পুকুর থেকে সংগ্রহ করেন। আর যেসব উপকরণ প্রয়োজন হয় তা বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। পরিমাণমতো সব উপকরণ একত্রিত করে মাছের পিঠা তৈরি করেন।