
ছবি: সংগৃহীত
ফ্যাটি লিভার শুধু লিভারের সমস্যা নয়, এটি হৃদ্রোগ ও বিপাকজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার বড় একটি সতর্ক সংকেত। ডা. সাইরিয়াক অ্যাবি ফিলিপস (যিনি “TheLiverDoc” নামে পরিচিত) সম্প্রতি ফ্যাটি লিভার ও হৃদ্স্বাস্থ্য নিয়ে এক পোস্টে ঘরে বসেই ফিটনেস যাচাই করার ৫টি সহজ পদ্ধতির কথা জানান।
তিনি বলেন, "ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো হৃদ্ ও বিপাকজনিত স্বাস্থ্যের উন্নয়ন। এজন্য আমি রোগীদেরকে কিছু সহজ ফিটনেস টেস্ট করার পরামর্শ দিই, যাতে তাদের সক্ষমতা বোঝা যায়।"
ঘরে বসেই ফিটনেস যাচাইয়ের ৫টি সহজ টেস্ট:
১. এক মিনিট সিট-টু-স্ট্যান্ড টেস্ট:
একটি ৪৫ সেমি উচ্চতা বিশিষ্ট চেয়ারে হাত বুকের ওপর রেখে বসুন। "স্টার্ট" সংকেতে হাত ব্যবহার না করে এক মিনিট ধরে বারবার উঠে দাঁড়ান ও বসুন।
৪৫-৫৯ বছর বয়সে ১৪ বারের কম করলে তা দুর্বল সক্ষমতার ইঙ্গিত দেয়। ২০ বারের বেশি করলে ভালো ফল ধরা হয়।
২. তিন মিনিটের স্টেপ টেস্ট:
৩০ সেমি উচ্চতার একটি স্টেপ বা সিঁড়ি ব্যবহার করে তিন মিনিট ধরে নিয়মিত ছন্দে "আপ-আপ, ডাউন-ডাউন" পদ্ধতিতে ওঠানামা করুন।
তারপর বসে ৩০-৬০ সেকেন্ডের মধ্যে আপনার হার্টবিট গণনা করুন।
৯৬ এর বেশি বিট হলে দুর্বল কার্ডিও ফিটনেস বোঝায়। ৮০ বিট বা কম হলে ভালো হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য বোঝায়।
৩. ফোরআর্ম প্ল্যাঙ্ক হোল্ড:
মাটিতে উপুড় হয়ে কনুই কাঁধের নিচে রেখে শরীর সোজা রেখে প্ল্যাঙ্ক অবস্থায় থাকুন যতক্ষণ সম্ভব। ৩০ সেকেন্ডের কম হলে দুর্বল ফিটনেস। ৯০-১২০ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখতে পারলে খুব ভালো কোর স্ট্রেন্থ।
৪. ওয়াল-সিট টেস্ট:
দেয়ালের সঙ্গে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়ান, পা কাঁধ চওড়া করে ৬০ সেমি দূরে রাখুন। তারপর ৯০ ডিগ্রি কোণে বসে থাকুন। ৩০ সেকেন্ডের কম হলে দুর্বল পায়ের শক্তি। ৭৫ সেকেন্ডের বেশি ধরে রাখতে পারলে তা ভালো সহনশীলতা বোঝায়।
৫. মোডিফায়েড পুশ-আপ টু ফেটিগ টেস্ট:
হাঁটুর ওপর ভর দিয়ে পুশ-আপ শুরু করুন, বুক মেঝের কাছাকাছি নামিয়ে আবার উঠুন। যতক্ষণ ঠিকভাবে করতে পারবেন, করুন।
১০-১২টির কম করলে দুর্বলতা নির্দেশ করে। ২৫টির বেশি হলে উপরের গড় মান।
সতর্কতা:
যেকোনো টেস্ট করার সময় মাথা ঘোরা, বুক ধড়ফড়, বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হাঁপানির মতো সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করুন এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
ডা. ফিলিপস জানান, এই পরীক্ষাগুলো কোনো পেশাদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিকল্প নয়, তবে এগুলো আপনার দৈনন্দিন শারীরিক সামর্থ্যের দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরতে পারে। যদি একাধিক টেস্টে আপনি গড়ের নিচে থাকেন, তবে শারীরিক অনুশীলনের গুরুত্ব বুঝে তা নিয়মিত শুরু করা উচিত।
তিনি বলেন, "আজই শরীরচর্চা শুরু করুন—এটি আপনার ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য, আয়ু ও জীবনের মান উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।" যদি লিভার সমস্যার কোনো লক্ষণ টের পান, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
নোভা