
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে সাইবার হামলার নতুন ঢেউ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো। মস্কোর বিরুদ্ধে ‘বিধ্বংসী সাইবার কার্যক্রম’ পরিচালনার অভিযোগ তুলে শুক্রবার কড়া ভাষায় এক বিবৃতিতে রাশিয়াকে দায়ী করেছে সামরিক জোটটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা রাশিয়ার ক্ষতিকর সাইবার তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানাই, যা মিত্রদেশগুলোর নিরাপত্তার জন্য হুমকি।” এই অভিযোগের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে এস্তোনিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র, যারা সম্প্রতি ন্যাটো সদস্য এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হওয়া বেশ কিছু সাইবার হামলার পেছনে রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউ-কে দায়ী করেছে।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের শুরুতে জার্মানি ও চেক প্রজাতন্ত্রও একইভাবে ‘এপিটি ২৮’ নামে পরিচিত এক হ্যাকার গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে, যা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত।
ন্যাটোর মতে, এই একই হ্যাকার গোষ্ঠী ইতোমধ্যেই রোমানিয়াসহ জোটভুক্ত একাধিক দেশের সরকারী প্রতিষ্ঠান ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, “এই ধরনের সাইবার হামলা এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর প্রতি অব্যাহত হুমকি রাশিয়ার একটি সুপরিকল্পিত কৌশল, যা আমাদের মিত্রদের অস্থিতিশীল করতে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার নিষ্ঠুর যুদ্ধ আরও জোরদার করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।”
মস্কোকে অবিলম্বে এসব ‘অস্থিতিশীলতামূলক সাইবার ও হাইব্রিড কার্যক্রম’ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ন্যাটো অভিযোগ করেছে, রাশিয়া জাতিসংঘের ‘সাইবারস্পেসে দায়িত্বশীল রাষ্ট্রীয় আচরণের নীতিমালা’কে উপেক্ষা করছে।
বিবৃতিতে ন্যাটো জানায়, এসব কর্মকাণ্ড ইউক্রেনের প্রতি মিত্রদের সমর্থন কমাবে না। বরং তারা ইউক্রেনকে সাইবার নিরাপত্তায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ‘তালিন মেকানিজম’ এবং তথ্যপ্রযুক্তি সক্ষমতা জোটের মাধ্যমে।
জোটটি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে জানায়, “আমরা একটি মুক্ত, নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ সাইবার জগত গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।” এতে আরও বলা হয়, রাশিয়াসহ সব রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনে আহ্বান জানানো হচ্ছে, যেন তারা সাইবার জগতে দায়িত্বশীল আচরণ করে।
শেষে ন্যাটোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “আমরা সাইবার হুমকি মোকাবেলায় আমাদের সকল সক্ষমতা ব্যবহার করব এবং সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী উপযুক্ত জবাব দেব, আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে।”
আফরোজা