
ছবি: সংগৃহীত
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল গোটা গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, তবে সরাসরি শাসন করবে না। তিনি জানান, উদ্দেশ্য হলো হামাসকে অপসারণ করে এমন একটি অসামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যা হামাস নয় এবং ইসরায়েলের ধ্বংস ডাকে না।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা এটিকে রাখতে চাই না। আমরা একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী চাই। আমরা শাসন করতে চাই না, সেখানে প্রশাসক হিসেবে থাকতে চাই না।” তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এই মন্তব্য আসে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মন্ত্রিসভা বৈঠকের আগে, যেখানে গাজা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাব আলোচনার কথা ছিল। তবে হামাস এক বিবৃতিতে এটিকে অভ্যুত্থান হিসেবে অভিহিত করেছে এবং দাবি করেছে, নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা ইসরায়েলি বন্দিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে তার ব্যক্তিগত স্বার্থে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বাইরে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে বন্দিদের মুক্তির চুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। একই সময়ে আন্তর্জাতিক মহলে গাজার মানবিক বিপর্যয় নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। জাতিসংঘ সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে দুর্ভিক্ষ মারাত্মক আকার নিতে পারে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, এতে এ ধরনের মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৭-এ দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ জন শিশু।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু গাজায় সামরিক অভিযান বাড়ানোর অনুমোদন চাইছেন, এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও, যেখানে বন্দিদের রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই পদক্ষেপ নিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির আপত্তি তুলেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সেনাপ্রধানের মত প্রকাশের অধিকার আছে, তবে সরকার যে নীতি নেবে, সেটি মানতে হবে।
বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জামির বলেন, “আমরা জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন নিয়ে কাজ করছি, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা করছি, আর তা করি আমাদের সৈনিক ও নাগরিকদের চোখের দিকে তাকিয়ে।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক সতর্ক করেছেন, সংঘাত আরও বাড়লে মানবিক দুর্ভোগ ও সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
ইসরায়েলি সাংবাদিক গিদেওন লেভি বলেছেন, গাজার নিয়ন্ত্রণ অন্য কোনো বাহিনী নেওয়ার ধারণা অবাস্তব। কে গাজায় প্রবেশ করবে? কে রাজি হবে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ছাড়া? তার মতে, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়া, যা তিনি জাতিগত নিধনের অংশ বলে অভিহিত করেন।
মুমু ২