ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

কেন যুক্তরাজ্য গাজা থেকে তাদের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছে না?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ৮ আগস্ট ২০২৫

কেন যুক্তরাজ্য গাজা থেকে তাদের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছে না?

ছবি: সংগৃহীত

এক নতুন জীবন শুরু হওয়ার কথা ছিল লোগেইন হামদানের। প্রায় এক বছর ধরে আবেদন, পরীক্ষা, সাক্ষাৎকার এবং যুদ্ধের মাঝেও অবিচল থেকে তিনি যুক্তরাজ্যের পাঁচটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়—গ্লাসগো, এডিনবার্গ, বার্মিংহাম, এক্সেটার এবং আলস্টারে ভর্তি হন এবং অর্থায়নও নিশ্চিত করেন। কিন্তু বিমান ধরার পরিবর্তে তিনি আজও গাজায় আটকে আছেন, যেখানে যুদ্ধ বাড়িঘর ধ্বংস করেছে, স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে, আর ভবিষ্যৎকে বন্দি করেছে।

গাজার আরও শতাধিক শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে ৪৮ জন পূর্ণ বৃত্তিপ্রাপ্ত, একই অবস্থায় আছেন। যুক্তরাজ্যে ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট জমা দেওয়ার কোনো কেন্দ্র গাজায় নেই। সেজন্য তাদের সীমান্ত পার হয়ে মিশর বা জর্ডানে পৌঁছানো দরকার, যা কেবলমাত্র উদ্ধার তালিকায় থাকলেই সম্ভব।

ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড ও ইতালি নিজেদের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থার (যেমন ICRC) সহযোগিতায় করিম শালোম সীমান্ত দিয়ে নিরাপদ বহির্গমন নিশ্চিত করেছে। কিন্তু যুক্তরাজ্য এখনো কোনো এমন পদক্ষেপ নেয়নি।

লোগেইন হামদান জানান, ভর্তির শর্ত পূরণ করতে তিনি যুদ্ধের মাঝেও ইংরেজি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, কখনো ধার করা ইন্টারনেট ব্যবহার করে, কখনো রাস্তায় প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে, চারপাশে বোমা পড়ার শব্দ শুনতে শুনতে। তার ভাই লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স, আর বোন তুরস্কের সরকারি মেডিকেল প্রোগ্রামে ভর্তি হলেও যুদ্ধের কারণে তারাও আটকা পড়েছেন।

শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্রিটিশ কাউন্সিল এবং সংসদ সদস্যদের কাছে বারবার আবেদন জানানো হলেও যুক্তরাজ্য সরকার এখনো কোনো উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেনি। গাজা স্কলারশিপ ইনিশিয়েটিভ (GSI) এর মতো সংস্থাগুলো বিষয়টি সরকারের কাছে তুলেছে, কিন্তু সময় ফুরিয়ে আসছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের ভর্তি পিছিয়ে দিয়েছিল, তবে এ বছরই শেষ সুযোগ।

অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো যুক্তরাজ্যও চাইলে সীমান্ত দিয়ে শিক্ষার্থীদের বের করে নিয়ে গিয়ে নিকটবর্তী দেশে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাতে পারে। এটি কোনো কল্পনা নয়, অন্যরা ঠিক এভাবেই করেছে।

লোগেইন বলেন, “আমি ব্রিটিশ শিক্ষাব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। আমি আমার জায়গা অর্জন করেছি। আশা করি যুক্তরাজ্য তার ঐতিহ্য মনে রাখবে এবং পদক্ষেপ নেবে এখনই, না হলে কবে?”

মুমু ২

×